কেন্দ্র দেশের গরিব, কৃষকদের জন্য অনেক সুবিধাই দিয়েছে। কিন্তু বাংলার মানুষ তা থেকে বঞ্চিত। কারণ মমতা ব্যানার্জি এবং তাঁর সরকার। হলদিয়ার সভায় এভাবেই মমতাকে বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। একের পর এক তুলে গেলেন আঙুল। বললেন, গত ১০ বছরে বাংলার মানুষ শুধুই নির্মমতা পেয়েছে। রবিবার হলদিয়ায় হেলিপ্যাড ময়দানে সভা করলেন মোদি। মঞ্চে তাঁর পাশে রয়েছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, দেবশ্রী চৌধুরীও। সেই মঞ্চ থেকেই রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুললেন মোদি।
গত দু’ সপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বঙ্গ সফরে এলেন প্রধানমন্ত্রী। এবার সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি–তে যোগদানকারী শুভেন্দু অধিকারীর দুর্গ মেদিনীপুরের হলদিয়ায় এলেন তিনি। • বাম–যোগ: সেখানে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘মমতার হাত ধরে বাংলায় বামেদের অত্যাচারের নীতিই পুনর্জীবন পেয়েছে। বাংলায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। যাঁরা মা–মাটি–মানুষের কথা বলেন আজ ভারতমাতার জন্য কোনও আবেগ নেই তাঁদের। আজকের বাংলা উন্নতি চায়, পরিবর্তন চায়। গত ১০ বছরে রাজ্য সরকার কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করতে পেরেছে? এই পরিস্থিতির জন্য এখানে রাজনীতিই সবথেকে বেশি দায়ী। স্বাধীনতার পর এখানে কোনও ভাল রাজনৈতিক দলই আসেনি। কংগ্রেসের আমলে শুধু দুর্নীতি হয়েছে। বামেরা দুর্নীতির সঙ্গে অত্যাচার চালিয়েছে। বিকাশ আটকে দিয়েছে ওরা। হিংসা এবং অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে ২০১১–র দিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলে। পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতাদি। কিন্তু ১০ বছরে নির্মমতা ছাড়া কিছু পাননি বাংলার মানুষ।’ তিনি এও বলেন, ‘ভারতকে বদনাম করতে এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতের ভাবমূর্তি নষ্টের ছক কষা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে দিদির মুখ থেকে একটি কথাও বেরোয় না। ভারত মাতা কি জয় শুনলে রেগে যান। কিন্তু দেশবিরোধী মন্তব্যে কিছু যায় আসে না ওঁর।’ নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, ‘আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের সময় অনেক টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। সেই টাকার জন্য আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। করোনার সময় কম বিপদ ছিল না। অনেক মানুষের কাজ চলে গিয়েছিল। বাংলার মানুষের জন্য সেই সময় বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের রেশন এখানকার সরকার সঠিক ভাবে গরিবদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেনি।’ এছাড়া তিনি এও বলেন, ‘কৃষকদের পিএম সম্মান নিধি প্রকল্পের সুযোগ দিতে চায় না তৃণমূল সরকার। মাত্র ৬ হাজার কৃষকের নাম পাঠিয়েছিল তারা। কিন্তু তাঁদেরও টাকা দিতে পারছে না কেন্দ্র। কারণ তৃণমূল সরকার এখনও পর্যন্ত তাঁদের অ্যাকাউন্টের তথ্য কেন্দ্রকে দেয়নি। এই নির্মমতা দেখছেন বাংলার কৃষক। কারা তাঁদের স্বার্থ না দেখে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করছে, দেখছেন বাংলার মানুষ। মমতাদির সরকার গরিবের জন্য ভাবে না। তার অন্যতম উদাহরণ হল আয়ুষ্মান যোজনা থেকে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করা। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুবিধা পেতে পারতেন সকলে। কিন্তু এখানকার সরকার বাংলায় কেন্দ্রের প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দিচ্ছে না। মোদি জানান, ‘বিজেপি এলেই এখানে আসল পরিবর্তন ঘটবে। পরিবর্তন কী তা ত্রিপুরার মানুষ বুঝছেন। ওখানেও বছরের পর বছর অত্যাচার সহ্য করেছিলেন সাধারণ মানুষ।’