দেশ

মিরাটের নেভি মার্চেন্ট সৌরভ রাজপুত হত্যাকাণ্ডে  সামনে আসলো রোমহর্ষক তথ্য!

একের পর এক রোমহর্ষক তথ্য সামনে আসছে উত্তরপ্রদেশের মিরাটের নেভি মার্চেন্ট সৌরভ রাজপুত হত্যাকাণ্ডে। পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর নভেম্বর থেকে সৌরভকে হত্যার পরিকল্পনা করছিলেন স্ত্রী মুসকান রাস্তোগি এবং তাঁর প্রেমিক সাহিল শুক্ল। ওই সময়ই ছুরি এবং ঘুমের ওষুধ কিনে রাখা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী এবং মেয়ের জন্মদিন পালন করতে লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন সৌরভ। ফেরার এক সপ্তাহের মধ্যেই নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের শিকার হন তিনি। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুসকান এবং সাহিল খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন খুব সাবধানে। অস্ত্র ও ঘুমের ওষুধ কেনা থেকে শুরু করে দেহ লোপাটের জায়গাও খুঁজে রেখেছিলেন সন্তর্পণে। মুসকান লম্বা ব্লেডওয়ালা দু’টি ছুরি কেনার সময় দোকানদারকে বলেছিলেন যে মাংস কাটতে এগুলি ব্যবহার করা হবে। স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান থেকে নিষিদ্ধ ঘুমের ওষুধ কেনার সময় নানা প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। ২০১৯ সালে একটি স্কুল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তাঁদের আলাপ হয়েছিল। দ্রুত সেই আলাপ প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়। জল এতদূর গড়িয়েছিল যে সৌরভের সঙ্গে আর থাকতে চাইছিলেন মুসকান। সৌরভকে পথের কাঁটা ভাবতে শুরু করেছিলেন দু’জনেই। সেখান থেকেই হত্যার পরিকল্পনা। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সৌরভকে হত্যার পরিকল্পনাটি করেছিলেন তাঁর

স্ত্রীই। স্বামীকে খুন করতে রাজি করাতে প্রেমিক সাহিলকে বোঝাতে শুরু করেছিলেন তাঁর মা মৃত্যুর ওপার থেকে স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন। এমনকি সাহিলের মায়ের পুনর্জন্মের গল্পও ফেঁদেছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে সৌরভের ভারতে আসার কথা জানার পরেই হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি শুরু করে দেন যুগল। ২৫শে ফেব্রুয়ারি প্রথমবার খুনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। সৌরভকে ঘুমের ওষুধ মেশানো খাবার খেতে দিয়েছিলেন মুসকান। কিন্তু অজ্ঞান হওয়ার বদলে ঘুমিয়ে পড়েন সৌরভ। ৪ মার্চ মুসকান ফের তাঁর স্বামীর খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন, যার ফলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর সে সাহিলের সাথে সৌরভকে ছুরি দিয়ে হত্যা করেন। অপরাধ গোপন করার জন্য দু’জনে মিলে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে দেন। খুনের আগেই মুসকান তাঁর ছয় বছরের মেয়েকে তাঁর দিদার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মিরাটের এসপি আয়ুশ বিক্রম সিং পিটিআইকে বলেন, “প্রাথমিকভাবে তাঁদের পরিকল্পনা ছিল দেহাংশগুলি একটি নির্জন স্থানে ফেলে দেওয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা দু’জনেই দেহটিকে একটি ড্রামে ভরে সিমেন্ট এবং বালি ভরে দেওয়া হয়।” খুনের পর দু’জনেই হিমাচল প্রদেশে গিয়ে তাঁদের অপরাধ গোপন করার চেষ্টা করেন। এরপর ১৭ মার্চ মিরাটে ফিরে আসে। পরের দিনই, সৌরভের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ সন্দেহভাজন এই যুগলকে আটক করে। বাড়ি থেকে সৌরভের ছিন্নভিন্ন দেহ সম্বলিত নীল ড্রামটি উদ্ধারের পর তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে মুসকান এবং সাহিলের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।