আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই-কে কাজে লাগিয়ে এবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর ছক কষেছে চিন৷ এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফট৷ শুধু ভারত নয়, আমেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচন নিয়েও একই পরিকল্পনা করেছে চিন৷ সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরীক্ষামূলক ভাবে এআই ব্যবহার করে ফলাফলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে চিন৷ তাইওয়ানের পর এবার তাদের পরবর্তী লক্ষ্য ভারত, আমেরিকার মতো বড় দেশগুলি৷ অদূর ভবিষ্যতে গোটা বিশ্বে প্রায় ৬৪টি দেশে নির্বাচন রয়েছে৷ এ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনও আসন্ন৷ যে দেশগুলিতে নির্বাচন রয়েছে সেখানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশ মানুষই বসবাস করেন৷ মাইক্রোসফট-এর থ্রেট ইন্টেলিজেন্স টিমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, চিনের সরকারি মদতপুষ্ট সাইবার গ্রুপগুলি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২৪ সালে গোটা বিশ্বে আসন্ন নির্বাচনগুলির জনমতের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাবে৷ এই কাজে চিনকে সাহায্য করবে উত্তর কোরিয়াও৷ মাইক্রোসফটের দাবি, এআই নির্ভর বিভিন্ন কনটেন্ট বা লেখা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে জনমত এমন ভাবে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করবে চিন, যাতে ভোটের ফলে তাদের সুবিধে হয়৷ মাইক্রসফট-এর পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হয়েছে, এমন ঘটনা অথবা খবর ছড়়িয়ে দেওয়া হবে যার কোনও সত্যতা নেই অথবা কখনও তা ঘটেইনি৷ এই ধরনের ভুয়ো তথ্য ক্রমাগত সমাজমাধ্যমে আসতে থাকলে এবং তার সত্যতা যাচাই না হলে ভোটারদের উপর এসবের প্রভাব পড়তে বাধ্য৷ যা নির্বাচনের ফলকেও প্রভাবিত করবে৷ চিনের এই অপচেষ্টা এখনও খুব সফল না হলেও ভবিষ্যতে যে তা কাজে লেগে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই মত মাইক্রোসফট-এর৷ তাইওয়ানে নির্বাচনের সময়ও ঠিক এ ভাবেই মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছিল চিন এবং তাদের সহকারী সাইবার গ্রুপগুলি৷ তাইওয়ানে ভোট চলাকালীন স্টর্ম ১৩৭৬ নামে এই সাইবার গ্রুপ খুবই সক্রিয় ছিল বলে দাবি মাইক্রোসফটের৷ ওই গ্রুপের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রার্থী বিরুদ্ধে মিথ্যে তথ্য দিয়ে অডিও ক্লিপ, মিম ছড়ানো শুরু হয়৷ এমন কি, ইরানের দেখানো পথে এআই নির্ভর টিভি অ্যাঙ্করদেরও এই কাজে ব্যবহার করা হয়৷ তাইওয়ানে চিন বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী উইলিয়াম লাই এবং বেশ কিছু সরকারি আধিকারিকেদর বিরুদ্ধে নেতিবাচক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়৷ আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে ভারতে ১৭ তম লোকসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে৷ যা চলবে ৪ জুন পর্যন্ত৷ তবে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো তথ্য ছড়়িয়ে যাতে নির্বাচনে জনমতকে প্রভাবিত করা সম্ভব না হয়, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন৷ গত মাসেই চ্যাট জিপিটি-র ডেভেলপার সংস্থার ওপেনএআই-এর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদের৷