কলকাতা

‘অরূপ বিশ্বাস আমার কাকু’, ভুয়ো পরিচয় দিয়ে উঠতি মডেলদের সঙ্গে প্রতারণা, গ্রেপ্তার যুবক

বাবা স্বরূপ বিশ্বাস। কাকু হয় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। টলিউডে ভালো র‍্যাপো আছে। কাছে এলেই ভালো কাজ পাইয়ে দেব। একটু নয় বিছানায় আসবে, ক্ষতি কী! শুধু এই আশ্বাস দিয়েই চলছিল একের পর এক উঠতি মহিলা মডেলদের নিজের ফাঁদে ফেলে শারীরিক, মানসিক আর আর্থিক ভাবে লুঠে নেওয়ার খেলা। কিন্তু ধাক্কাটা খেতেই হল এক প্রতারিত মডেল গোটা বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়াতে তুলে ধরায়। সেই পোস্ট আবার নজরে পড়ে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের। এরপর তিনিই থানায় এফআইআর দায়ের করলে পুলিশ গ্রেফতার করে প্রতারক ওই যুবককে। আর তাকে জেরা করে পুলিশ যা জানতে পেরেছে তাতেই কার্যত তাঁদের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। কারন ওই যুবকের ৮টি ফেসবুক প্রোফাইল রয়েছে আর তা দিয়ে সে ইতিমধ্যেও বেশ কিছু যুবতিকে তার প্রতারণার শিকার বানিয়েছে। জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণী টলিউডে কাজ খুঁজতে গিয়েই রঞ্জিত বিশ্বাস ওরফে আকাশ বিশ্বাস নামে ওই যুবকের পাল্লায় পড়েন। অভিনয়ের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই যুবক তাঁর ঘনিষ্ট হতে চায়। সেই সময় ওই দুইজনের মধ্যে যে সব কথাবার্তা হয়েছে তার সব কিছুই মোবাইলের স্ক্রিনশট নিয়ে তুলে রেখেছিলেন ওই তরুণী। পরে তা আনেন সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের সামনে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বাবুরাম ঘোষ রোডের বাসিন্দা আকাশ ওরফে রঞ্জিত নামের ওই যুবক ওই তরুণীর কাছে ১০ হাজার টাকা চায় কাজ পাইয়ে দেবে বলে। সেই টাকা মেয়েটি দেয়ও। কিন্তু তারপরেও কাজ না পেয়ে ওই তরুণী টাকা ফেরত্‍ চায় আকাশের কাছে। সেই টাকা আকাশ ফেরত্‍ দিতে অস্বীকার করলে সেখান থেকেই বিবাদের সূত্রপাত ঘটে তাঁদের মধ্যে। হোয়াটসঅ্যাপে তিনটি মেয়ের নানা মডেলিংয়ের ছবি দিয়ে তাঁর সঙ্গে শারিরীক ঘনিষ্ঠতার ছবি ওই তরুণীকে পাঠায় রঞ্জিত। সঙ্গে দেয় তাঁর সঙ্গেও শারীরিক ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত। সেই সময় রঞ্জত ওই তরুণীকে জানায়, ‘এই তিনটি মেয়ে কাজের আগেই ব্যক্তিগতভাবে আমার ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। চাইলে, জেদ করলেই আমি এমন অনেক এনজয় করতে পারি। আমি তো চাইলে তোমার সঙ্গেও এনজয় করতে পারি।’ কিন্তু ওই তরুণী সেই কুপ্রস্তাবের বিরোধীতা করলে রঞ্জিত জানায়, ‘ক্ষমতা থাকলে টালিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিতে পা দিয়ে দেখাও। এই ইন্ট্রাস্ট্রির সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস আমার বাবা। টালিগঞ্জের বিধায়ক, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আমার কাকু।’ এই পরিচয় দেওয়ার পরেই ওই তরুণী নানা ভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাসের দুটি মেয়ে রয়েছে কিন্তু কোনও ছেলে নেই। তারপরেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে সব কিছু জানান। তাঁর সেই পোস্ট অরূপ বিশ্বাসের চোখে পড়তেই তিনি তাঁর পরিবারের মানহানির অভিযোগ তুলে রঞ্জিতের বিরুদ্ধে রিজেন্ট পার্ক থানায় এফআইআর দায়ের করেন। এরপরেই গ্রেফতার হয় রঞ্জিত নামের ওই প্রতারক। স্বভাবতই তাঁর নাম ভাঙিয়ে রাজ্যের এক উঠতি অভিনেত্রীকে প্রতারণা করায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ অরূপ বিশ্বাস পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃত যুবককে আজই আলিপুর আদালতে পাঠাচ্ছে পুলিশ।