আইএসএলের মিনি ডার্বিতে একাধিপত্য নিয়ে খেলে মোহনবাগান ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিল মহামেডানকে আজ, শনি সন্ধ্যায় সবুজ-মেরুন ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল সাদা-কালো ব্রিগেড…মহামেডান নিজেদের হোম ম্যাচে অঘটনের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু একরাশ লজ্জা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হল। খেলার অনেক আগে থেকেই একপেশে হয়ে গিয়েছিল! প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলেই তা ফ্লাড লাইটের আলোর মতোই উজ্জ্বল হয়ে যাবে। মহামেডান জর্জরিত একাধিক অভ্যন্তরীণ সমস্যায়। মিনি ডার্বির ঠিক আগেই দলের হেড কোচ আন্দ্রে চেরনিশভ, ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছেন। রুশ কোচ, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক পোস্টে লিখেছিলেন, ক্লাবের কাছে তাঁর তিন মাসের বেতন বকেয়া! ফুটবলারদেরও পড়তে হয়েছে এই একই বেতন সমস্যায়! এই অবস্থায় দলের সহকারি কোচ মেহেরাজউদ্দিন ওয়াডুর উপর ছিল ম্যাচের দায়িত্ব। দেখতে গেলে পুরো দলটাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে…. সেখান থেকে এই ম্যাচ খেলতে নামা! এদিন ম্যাচের ১২ মিনিটেই মোহনবাগানের হয়ে গোলের খাতা খুলে ফেলেন অধিনায়ক শুভাশিস বোস। মহামেডান বক্স লক্ষ্য করে লিস্টন কোলাসোর ভাসানো কর্নার থেকে মনবীর সিং হেড করেন, সেই বল জেসন কামিন্স, জেমি ম্যাকলারেন ও দীপেন্দু বিশ্বাসের পা হয়ে চলে আসে বাগান অধিনায়কের কাছে, বাঁ পোস্ট ঘেষে শুভাশিসের বল নেট খুঁজে নেয়। এই গোলের রেশ কাটার আট মিনিটের ভিতর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মনবীর, কামিন্সের কর্নার থেকে লাফিয়ে হেড করে গোল করেন মনবীর, প্রথম গোলের মতোই এবারও সাদা-কালো গোলরক্ষক পদম ছেত্রীর কিছু করার ছিল না। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে মহামেডানের যাবতীয় আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেন সেই বাগান অধিনায়ক, কামিন্সের ফ্রি-কিক থেকে ম্যাকলারেনের বক্সের ভিতর শৈল্পিক ছোঁয়ায় বল চলে যায় শুভাশিসের কাছে। তিনি হেসে খেলে স্কোরলাইন ৩-০ করে দেন। তিন গোলে পিছিয়ে থাকা মহামেডানকে বিরতির যোগ করা সময়ে আরও পিছিয়ে দেন কাসিমভ। উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার ইচ্ছাকৃত ভাবে একাধিকবার টম অলড্রেডকে কড়া ট্যাকেল করে লাল কার্ড দেখেন! যার কোনও দরকারই ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জন ফুটবলারে খেলতে নেমে মহামেডান চতুর্থ গোল হজম করে বসে ৫৩ মিনিটে, বাঁ-দিক থেকে কামিন্সের মাপা সেন্টার থেকে মনবীর হেডে গোল করে বাগান জনতাকে সেলিব্রেশনে ভাসিয়ে দেয়| শুভাশিসের মতো মনবীরও পেয়ে যান জোড়া গোলের স্বাদ। দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান গোলের ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত, কিন্তু অল্পের জন্য গোলগুলি হয়নি। ১৯ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে শিল্ডের আরও কাছে এগিয়ে গেল, ১৭ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে গোয়া থাকল দুয়ে, ১৭ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে জামশেদপুর।
