খেলা

পঞ্জাব এফসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দিল সুপার জায়েন্ট মোহনবাগান

সুপার জায়েন্ট মোহনবাগান ৩-১ গোলে পঞ্জাব এফসিকে  হারিয়ে দিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। শনিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে, ওড়িশা-চেন্নাইয়িন প্রথম ম্য়াচে মুখোমুখি হয়েছিল। বজ্রবিদ্যুতের কারণে সেখানে খেলা প্রায় ৩৫ মিনিট বন্ধ ছিল। যার ফলে মোহনবাগান-পঞ্জাব ম্য়াচ শুরু হল রাত ৮টার বদলে ৮টা ৩৭ মিনিটে। ৪০ মিনিট দেরিতে বলা চলে। পঞ্জাবের কোচ স্টাইকোস ভারগেতিসের ম্য়াচের আগের দিন জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, তাঁদের ডিফেন্ডারদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। তবে খেলতে নেমে সেকথা মিলিয়ে গেল ১০ মিনিটের মধ্যেই। ঢিমে তালে শুরু হওয়া খেলার টেম্পো বাড়িয়ে দিল মোহনবাগান। দুরন্ত টিম গেমে চলে আসে প্রথম গোল। গ্লেন মার্টিন্স বল বাড়ান আশিস রাইকে। তাঁর থেকে বল নিয়ে সাহাল দারুণ কাটব্য়াক করেন কামিংসকে। অজি স্ট্রাইকার পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গোল করতে কোনও ভুলই করলেন না। সবুজ-মেরুন জার্সিতে তাঁর পাঁচ নম্বর গোলটি চলে আসে। প্রথম গোল খাওয়ার পরেই পঞ্জাব গোলের রাস্তা খুঁজতে শুরু করেছিল বটে, তবে ৩৫ মিনিটের মধ্যে ফের মেরিনার্স এগিয়ে যায়। কামিন্সের থ্রু পাস থেকে বক্সের মধ্যে লিস্টন কোলাসো মাপা মাইনাস করেন দিমিত্রিয়োস পেত্রাতোসকে। দিমি বুলেট শটে গোল করে স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলেন। যদি কোলাসো নিজে শট মারতেন, তাহলে হয়তো গোলকিপার বল রুখে দিতে পারতেন। সেক্ষেত্রে কোলাসোর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। প্রথমার্ধে চার মিনিট যোগ করা হলেও স্কোরলাইনে কোনও ফারাক পড়েনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খেলা একেবারে সেয়ানে-সেয়ানে শুরু হয়। পঞ্জাব গিয়ার বদলে ফেলে। ৪৯ মিনিটে আশিস রাইয়ের গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু এর কিছু পরেই মোহনবাগান গোল খেয়ে বসে নিজেদের দোষেই। যদিও এই গোলটির জন্য গ্লেন মার্টিন্স নিজের মাথা চাপড়াবেন। গ্লেন না দেখেই ব্য়াক পাস করে বসেন। আর সেই বল ধরেই পঞ্জাব ক্য়াপ্টেন লুকা মাকেন ছুটে গোল করে বেরিয়ে যান। ৫৩ মিনিটে স্কোরলাইন ২-১ হয়ে যায়। এরপর ৬১ মিনিটে পঞ্জাবের সামনে সুযোগ ছিল ২-২ করার। জুয়ান মেরার ক্রস থেকে আশিস প্রধান হেডে দারুণ গোল করেছিলেন। তবে সেটিও রেফারি নাকচ করে দেন অফসাইডের জন্য। এরপর ৬৪ মিনিটে শুভাশিসের পরিবর্তে নামা মনবীর গোল করে যুবভারতীর গ্য়ালারিকে উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে দেন। মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে অসাধারণ গোল করেন তিনি। পেত্রাতোসের ক্রস থেকে ছবির মতো সুন্দর ফ্লিক করে সেলিব্রেশনে মাতেন মনবীর। ৩-১ হওয়ার পরেই জোড়া পরিবর্তন আনেন ফেরান্দো। দিমিকে তুলে আর্মান্দো সাদিকুকে নামান। কামিংসকে উঠিয়ে আনেন হুগো বুমোসকে। তার কিছুক্ষণ পর আবার ফেরান্দো সাহালে জায়গায় অভিষেক সূর্যবংশী ও গ্লেনের জায়গায় খেলান হামতেকে। জয় নিশ্চিত জেনেই ফেরান্দো পরপর বদল আনেন। তিনি আগেই বলেছিলেন যে, তিনি সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাবেন। কারণ তাঁকে আইএএসএলের সঙ্গেও এএফসি খেলতে হচ্ছে। ফলে তিনি তাঁর তারকা ফুটবলারদের নব্বই মিনিট কিছুতেই খেলাবেন না। অন্যদিকে এদিন পঞ্জাবের কোনও ফুটবলারই আলাদা করে নজরে পড়ল না। কোথাও যেন আই-লিগ আর আইএসএলের ফারাকটা রয়ে গেল। তিন গোল হজম করার পর কোথাও যেন তাঁদের গোল করার তাগিদই হারিয়ে গিয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের পর ছয় মিনিট যোগ করেছিলেন রেফারি। তবে খেলার ফল একই থেকে যায়।