দিন দুয়েক আগেই সল্টলেকে ভুয়ো কলসেন্টার প্রতারণার চক্রের পান্ডাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অফিস থেকেই উদ্ধার হয় ৬৭ লক্ষ টাকা। এরপর ধৃত অবিনাশ যশপালকে জেরা করে তাঁর চিনারপার্কের বাড়িতে হানা দেয় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। এই অভিযানে উদ্ধার হয়েছে, তিন কোটি দুই লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। বাড়ির ভেতরে তিনটা ট্রলিব্যাগের মধ্যে দরজার পিছনে টাকাগুলি লুকিয়ে রাখা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত ২৫ তারিখ রাতে বিধাননগরে হদিশ মেলে একটি ভুয়ো কল সেন্টারের। গ্রেপ্তার করা হয় তিন জনকে। বিধাননগর গোয়েন্দা পুলিশ সাইবার ক্রাইম এবং বিধান নগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে তল্লাশি চালিয় উদ্ধার হয় নগদ ৬৭ লক্ষ টাকা। এর পাশাপাশি ১৪টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন, দু’টি নোটবুক, একটি টাকা গোনার যন্ত্র মেশিন, ছ’টি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। বিধান নগর কমিশনারেটের ডিসি ডিডি সোনাওয়ানে কুলদীপ সুরেশ জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার বিধাননগর কমিশনরাটের তরফ থেকে একটি যৌথ তল্লাশি চালানো হয়। বিধাননগর গোয়েন্দা পুলিশ সাইবার ক্রাইম এবং বিধান নগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ যৌথভাবে সেক্টর ফাইভ-এর একটি অফিসে তল্লাশি চালায়। পুলিশ জানতে পেরেছিল, সল্টলেকের ইমাজিন টেক পার্ক নামক একটি বহুতলে একটি আন্তর্জাতিক ভুয়ে কল সেন্টার চলছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে দেখা যায় একটি অফিসে কল সেন্টার চলছে। তল্লাশির সময় সেখানে দু’জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার পরীক্ষা করে দেখা যায় একটি বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিদেশে ফোন করা হতো। উপস্থিত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে, আমেরিকার নাগরিক-সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের তথ্য রয়েছে তাঁদের কাছে। সংখ্যাটি লক্ষাধিক। সেখান থেকে নম্বর নিয়ে তাঁরা সেই সমস্ত বিদেশি নাগরিকদের ফোন করে টেক সাপোর্ট দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করতেন। এই টাকা গিফট কার্ড ও বিটকয়েনের মাধ্যমে নেওয়া হতো। এরপরে সেই টাকা অন্য দেশ ঘুরিয়ে তারপরে নগদে পরিণত করা হত। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় কল সেন্টারটি অবিনাশ জয়সওয়াল নামে এক ব্যক্তি চালাতেন। তাঁকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অফিসে উপস্থিত দুই কর্মীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত পীযূষ-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের বুধবার আদালতে হাজির করিয়ে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অবিনাশ যশপাল-সহ মোট তিন জনকে।
