দেশ

ছেলে শুভ্রাংশুকে না জানিয়ে আচমকা দিল্লিতে মুকুল রায়, জল্পনা তুঙ্গে

রাজ্য রাজনীতি আচমকা আলোচনায় মুকুল রায়। কৃষ্ণনগরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের প্রবীণ নেতার দেখা মিলল দিল্লিতে। সূ্ত্রের খবর, ছেলে শুভ্রাংশু রায়কে না জানিয়েই দিল্লিতে গিয়েছেন বিধায়ক। ২০২১ নির্বাচনের আগে বিজেপির সর্বভারতীয় বৈঠকে যোগ দিতে শেষ বারের মতো দিল্লি এসেছিলেন মুকুল রায়। তারপর দীর্ঘ দুবছর পরে সোমবার আবার দিল্লিতে পা রাখা। একদা বাংলার চাণক্য বলে খ্যাত মুকুল রায়ের এই হঠাৎ দিল্লি আগমন নিয়ে বেশ কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ভাইরাল ভিডিওতে মুকুলকে বলতে শোনা যায়, ‘দিল্লিতে দরকার আছে, আসতে পারব না? অসুস্থতা নয়, এমনই এসেছি। আমি তো এখানের এমএলএ, এমপি, না আসার তো কোনও কারণ নেই। কোনও বিশেষ কারণে আসিনি। দিল্লিতে আসলে ডাক্তার তো দেখাতেই হয়। হঠাত করে নয়, দিল্লিতে আমি মাঝে মধ্যেই আসি। এবার আসতে একটু দেরি হল এই যা। যে ক’দিন দরকার হব সে ক’দিন থাকব।’  জানা গিয়েছে, সন্ধ্যার বিমানে ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লিযাত্রা মুকুলের। গতকাল সন্ধে পৌনে ৭টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছন মুকুল রায়। নিরাপত্তারক্ষীদের বাইরে রেখে ২ জনকে নিয়ে ঢুকে যান ভিতরে। ইন্ডিগোর বিমানে মুকুলের ফ্লাইট নম্বর ছিল 6 E898। কিছুক্ষণ পর, বিমানবন্দরে হাজির হন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। বাবাকে বিমান থেকে নামিয়ে দিতে থানায় লিখিত অনুরোধ করেন শুভ্রাংশু। কিন্তু ততক্ষণে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয় ইন্ডিগো-র বিমান, খবর সূত্রের। রাত পৌনে ১০টা নাগাদ দিল্লিতে নামে বিমান। রাত ১০টা নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দর থেকে বেরোতে দেখা যায় মুকুল রায়কে। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, মুকুলবাবু নিজেই জানিয়েছেন বিশেষ প্রয়োজনে তিনি দিল্লি এসেছেন। অন্যদিকে, একাংশের দাবি ফের বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন মুকুল রায়। যদিও মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু এনিয়ে কোনও আলোকপাত করতে পারেননি। সূত্রের দাবি, তিনি নিজেও যথেষ্ট উদ্বেগে। অসুস্থ শরীরে বাবার দিল্লি যাত্রা তাঁর কাছেও যথেষ্ট রহস্যজনক। উল্লেখ্য, সম্প্রতিই সাংঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকুল রায়। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছিল, শট টার্ম মেমরি লসের সমস্যায় ভুগছেন মুকুল রায়। সঠিকভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না তিনি। দুঁদে নেতার মুখ দেখে মানুষ চিনতেও অসুবিধা হচ্ছিল বলে জানা যায়। প্রসঙ্গত আচমকা স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মুকুল রায়। তার প্রভাব পড়ে তাঁর শরীরের উপরেও। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় বিশেষত স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছিলেন মুকুল রায়। মস্তিষ্কে জমেছিল জল। আর এর জেরেইশর্ট টার্ম মেমরি লসের মতো সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে তাঁকে। চিকিৎসকরা তাঁর মস্তিষ্কের অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মতো একটি চিপ লাগানো হয় তাঁর মাথায়। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসারত ছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের এই বিধায়ক। সেরে উঠলেও বহুদিন ধরেই প্রকাশ্যে দেখা মিল ছিল না দুঁদে নেতার। হঠাৎই সোমের সন্ধ্যায় চাঞ্চল্য ফেলে একেবারে দিল্লি হাজিরা বঙ্গ রাজনীতির চাণক্যের। পঞ্চায়েতের আগে আবারও কি বদলাবে রাজনৈতিক সমীকরণ উঠছে প্রশ্ন।