দেশ

নিট-নেট দুর্নীতি নিয়ে দায় স্বীকার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের, দিলেন উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ার আশ্বাস

নিট-নেট(NEET-NET) দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় দেশ। প্রশ্নের মুখে দেশের উচ্চশিক্ষা। এরইমধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসরে নামলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিট পরীক্ষা নিয়ে বিহার সরকারের থেকে কিছু তথ্য পেয়েছি। পটনা পুলিশের তরফে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে গলদ পাওয়া গিয়েছে। এনটিএ হোক বা অন্য কোন ক্ষেত্রে কোনও রকম কারচুপির প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” নিট পরীক্ষা পরিচালনা করে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ। অভিযোগ উঠছে, নিট পরীক্ষায় যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে,তার সঙ্গে এই সরকারি সংস্থারও কয়েকজন ব্যক্তি যুক্ত আছেন। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য এদিন এক স্পেশাল তদন্ত কমিটি গঠন করল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ‘ফাঁস’ হয়েছে বলে বিরোধী এবং পরিক্ষার্থীদের একাংশ থেকে অভিযোগ করা হলেও, সেই দাবি মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও বিহারের পটনায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা প্রায় প্রমাণিত হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পটনা পুলিশ। তার মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র কেনা ছাত্রও রয়েছে। তবে বিহারের প্রশ্ন ফাঁস, বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর। তিনি জানিয়েছেন, এই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য সকল পরিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত বিপন্ন করবে না সরকার। নিট পরীক্ষাকে ঘিরে দুর্নীতির সন্দেহের বাতাবরণে, বিভিন্ন মহল থেকেই দাবি উঠছে এনইইটি পরীক্ষা বাতিল করে, ফের পরীক্ষা নেওয়ার। তবে, সরকার যে সেই পথে হাঁটার কোনও চিন্তা-ভাবনা করছে না তাও এ দিন তিনি পরিস্কার করেন। শুধু নিট নয়, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে ইউজিসি নেট পরীক্ষাতেও। বুধবারই এই পরীক্ষা বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। ফের পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রসঙ্গে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, “৩টের সময় খবর আসে, ডার্ক নেটে প্রশ্নপত্র এসে গিয়েছে। সেই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে আসল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। সেটা মিলে যায়। তারপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই পরীক্ষা বাতিল করা হবে। এবং যাবতীয় তথ্য় সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হয়”। তিনি আরও বলেন, “আমরা এই দায় নিচ্ছি। আমরা এই ব্য়বস্থা ঠিক করব। যে পরীক্ষার মাধ্যমে ভবিষ্যতের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও গবেষক আসবেন। তার মান ও স্বচ্ছতা রাখা প্রয়োজন। সেই কারণেই পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।” এদিন নিট পরীক্ষা নিয়ে বিজেপি-আরএসএস-কে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি-আরএসএস দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি দখল করে নিতে চাইছে। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া আটকাতে পারছেন না। রাহুলের এই অভিযোগ সম্পর্কে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, “আমরা এই নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। এর বিরুদ্ধে আমরা পদক্ষেপ করব। যা ঘটেছে তার দায় আমি নিচ্ছি। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। এখন ছাত্র-ছাত্রীদের হিতের কথাই আমার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। ওদের ক্ষোভ যুক্তিযুক্ত। এক্ষেত্রে যা করণীয় তা আমরা করব।”