পুলিশের গুলিতে কিশোরের মৃত্যুর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভের দাবানলে জ্বলছে প্যারিস। ছবি ও কবিতার শহর প্যারিস যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায়-দফায় সংঘর্ষ চলছে। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েও প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করা যায়নি। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার রাত নয়টা থেকে প্যারিসে বাস ও ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। একাধিক শহরে জারি হযেছে কার্ফু। আগামী সোমবার পর্যন্ত কার্ফু বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্যারিসের শহরতলি নতেঁর এলাকায় নাকা চেকিংয়ের সময়ে গাড়ি না থামানোর অপরাধে ১৭ বছরের এক কিশোর নাহেলকে গুলি করে হত্যা করেন দায়িত্বরত ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক। উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভত কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিবাদে গত তিন দিন ধরে উত্তাল প্যারিস, নঁতের, ক্লামার্ত, মার্সেই-সহ একাধিক শহর। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ৪০ হাজারের বেশি দাঙ্গা পুলিশকে মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভ সামাল দিতে নাকানিচোবানি খাচ্ছে পুলিশ বাহিনী। বৃহস্পতিবার ছেলের নৃশংস খুনের বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন নিহত নাহেলের মা মোনিয়া ননতের। তাঁর সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন হাজার-হাজার সাধারণ মানুষ। তাঁদের পরনে ছিল ‘নাহেলের মৃত্যুর বিচার চাই’ শ্লোগান লেখা সাদা টি শার্ট। ওই মিছিলে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষ রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ে পুলিসের গাড়ি থেকে শুরু করে রাস্তার পাশে থাকা পুলিশের চৌকিতে অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশের সঙ্গে দফায়-দফায় সংঘর্ষ হয়। নিমিষেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী ছাড়াও পুলিশের একাধিক কর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, তার জন্য তড়িঘড়ি জারি করা হয় কার্ফু। ট্রেন, ট্রাম ও বাস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, প্যারিসের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ। পুলিশ প্রায় ৬৬৭জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে।