স্ত্রী নার্সিংয়ের সরকারি চাকরি পেয়ে ছেড়ে চলে যাবে, এই আতঙ্কে স্ত্রী’র হাতের কব্জি কেটে নিয়েছিল স্বামী । কিন্তু কেতুগ্রামের রেণু খাতুন যে অন্য ধাতুতে গড়া । দুর্গাপুরের শোভাপুর সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন তিনি । হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন রেণুর হাত আর জোড়া লাগানো সম্ভব নয় ৷ কারণ, ঘটনার এক দেড় ঘণ্টার মধ্যে চেষ্টা করলে ওই হাত জোড়া লাগানো যেতে পারত, কিন্তু রেণুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় প্রায় পাঁচ-সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে ৷ তাই আর তাঁর হাত জোড়া লাগানো সম্ভব না ৷ সেখানে গিয়েই মঙ্গলবার দেখা গেল, বাঁ-হাতেই লেখা অভ্যাস করছেন তিনি ৷ রেণু বদ্ধপরিকর, সামনে প্রতিকূলতা এলেও সে সরকারি নার্সিংয়ের চাকরি করবেই । ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যদফতর থেকে রেণুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে । রেনুর পাশে দাঁড়িয়েছে সহকর্মীরাও । দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন রেণুর সহকর্মী এবং পরিবার-পরিজনেরা। পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে গ্রেফতার হলেন মূল অভিযুক্ত তথা রেণুর স্বামী শের মহম্মদ। মঙ্গলবার তাঁকে জেলার প্রান্ত থেকে গ্রেফতার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল শেখ মহম্মদ। মঙ্গলবার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। আজ ভোরে পুলিশ শের মহম্মদের বাবা সিরাজ শেখ ও মা মেহেরনিকা বিবিকে চাকটা বাসস্ট্যাণ্ডের কাছ থেকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, মঙ্গলবার ভোরে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই শের মহম্মদের হদিস জানার চেষ্টা চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত। স্বামীর নৃশংসতার শিকার হওয়া কেতুগ্রামের নার্সিং স্টাফ রেণু খাতুনের সঙ্গে মঙ্গলবার দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা করলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ৷ এদিন মহিলা কমিশনের চারজনের প্রতিনিধিদলও এদিন হাসপাতালে যায় ৷ সদ্য নার্সিংয়ের সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন রেণু ৷ কিন্তু ডান হাত বাদ চলে যাওয়ায় সেই কাজ রেণু আর করতে পারবেন কি না, তা এখনও অনিশ্চিত ৷ এই চাকরি সে করতে না-পারলেও যাতে অন্য সরকারি চাকরি পায় তার জন্য রাজ্য প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর কছে তাঁরা আবেদন করবেন বলে জানান মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ৷