ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে একই পথে হাঁটল ভারত ও চিন। দুটি দেশই রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দার খসড়া প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থাকল। একই পথে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে আরব আমিরশাহী। অন্যদিনে রাষ্ট্রসংঘের ১১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু কেন এমন পথ নিল ভারত- রাষ্ট্র সংঘেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছে। ভারত জানিয়েছে, সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রকে অবশ্যই মনবিরোধ ও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আলোচনার ওপর ভরসা রাখতে হবে। কিন্তু ভারত ভোট দেয়নি তার কারণ হিসেবে ভারত জানিয়েছে, এটি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘মার্কিন-স্পনসর্ড রেজুলেশন’। তাই ভোট দান থেকে বিরত ছিল। রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী সদস্য টিএস তিরুমূর্তি বলেছেন, ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের কারণে ভারত রীতিমত বিরক্ত। ভারত সর্বদাই হিংসা ও শত্রুতা বন্ধ করার পক্ষে। তারজন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে তা অবশ্যই গ্রহণ করবে ভারত। তিনি আরও বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন সমস্যা মেটানোর একমাত্র উপায় হল আলোচনা। তিনি আরও বলেছেন ‘কিন্তু দুঃখের বিষয় হল সমস্যা মেটাতে কূটনীতির পথ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু সেই কূটনীতির পথেই ফিরে যেতে হবে। এই সমস্ত কারণেই ভারত রেজোলিউশনের ওপর ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে খসড়া প্রস্তাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, জর্জিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ ১১টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু রাশিয়া ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। তাই রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। রাশিয়ার সেই অধিকারই প্রয়োগ করেছে। তাই রেজোলিউশন ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিবেশী ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলার জন্য পুতিনের সিদ্ধান্তের সমালোচনার জন্য একটি সুযোগ দিয়েছিল।
তবে রাশিয়ার ভোটো দেওয়ার পরই মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, রাশিয়া ভেটো দিতেই পারে। কিন্তু আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির কণ্ঠস্বর রাশিয়া আটকাতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি বলেন ইউক্রেনের জনগণকেই আটকাতে পারবে না রাশিয়া। রাশিয়া বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষেদের আবর্তনশীল সভাপতিত্ব ধারন করে। সেই কারণে আরও একটি প্রস্তাবের মুখোমুখি দাঁড়াতে হতে পারে রাশিয়াকে। কিন্তু সেই প্রস্তাব যে যথেষ্ট ব্যবধানে পাশ হতে পারে তা বাধ্যতামূলক নয়।