বেনামে লেনদেন করলে তা দেশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে এতদিন গণ্য হত। কিন্তু মঙ্গলবার সেই আইনটিকেই ‘অসাংবিধানিক’ বলে জানিয়ে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আর এই রায় নেমে এসেছে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া এক রায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্র সরকারের দায়ের করা মামলায়। ফলে বেনামি সম্পত্তির লেনদেনের অভিযোগে অভিযুক্ত আর কেউ ওই আইনে সাজা পাবেন না। জেল হবে না অপরাধীর, হবে না জরিমানাও। জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সালে দেশে তৈরি হওয়া বেনামি লেনদেন (প্রতিরোধ) আইনের ৩(২) ধারাটির মাধ্যমে এতদিন মূলত বেনামি সম্পত্তির লেনদেনের অভিযোগে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হতো। এই আইনমাফিক আইনভঙ্গকারীকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা বা উভয়ই দেওয়ার বিধান ছিল। ‘কেন্দ্র বনাম মেজার্স গণপতি ডিলকম প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের ওই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের বেনামি লেনদেন প্রতিরোধ সংশোধনী আইনটিকে ‘ভবিষ্যনির্ভর’ বলে মন্তব্য করেছিল। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এম ভি রমনা, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি এবং বিচারপতি হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাটির শোনার পরই শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের পক্ষেই রায় দেয়। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ১৯৮৮ সালের বেনামি লেনদেন প্রতিরোধ আইনের ৩(২) ধারা অসাংবিধানিক তো বটেই, এ সংক্রান্ত ২০১৬ সালের সংশোধনী আইনটিও অসাংবিধানিক। আইনটি ভারতীয় সংবিধানের ২০(১) অনুচ্ছেদের বিরোধী এবং স্পষ্টতই অযৌক্তিক। আর এখানেই অনেকেই মনে করছেন এই রায়ের কিছুটা হলেও সুবিধা পেয়ে যেতে পারেন বাংলার স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে হওয়া দুর্নীতিকাণ্ডে বিদ্ধ পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।


