কলকাতা

কোটি টাকা নিয়ে প্রতারিতের হাতেই অপহৃত প্রতারক, পুলিশের জালে ৫

কলকাতাঃ চাকরির জন্য জমা দেওয়া কোটি টাকা ফেরত পেতে অপহরণের ছক কষলেন প্রতারিত ব্যক্তি। আর সেইমতো কাজ করতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ৫ যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, সৌমেন কুমার বসু নামে এক যুবক সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মালদহের ইংরেজবাজারের বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ নামে একজনের কাছ থেকে দফায় দফায় ১ কোটি টাকা আদায় করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষার পরও চাকরি না পাওয়ায় অভিজিৎ গোটা বিষয়টি বুঝতে পারেন। তিনি ১ কোটি টাকা উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা করতে থাকেন। পুলিশ জানতে পারে, সৌমেন বসুকে অপহরণের মাধ্যমে সেই টাকা উদ্ধার করার ভাবনাচিন্তা করতে থাকেন অভিজিৎ। সেইমতো বীরভূমের লাভপুরের ৬জন বাসিন্দাকে তিনি কাজে লাগান।এই ছ’জন বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদ কলকাতার অন্যতম জনবহুল এলাকা চাঁদনি চক থেকে পুলিশের ছদ্মবেশে সৌমেন বসুকে একটি বোলেরো গাড়ি নিয়ে অপহরণ করে। উৎসবের মরশুমে শহরজুড়ে নাকা চেকিংয়ের সময় গাড়িটি কলকাতা পুলিশের চোখে পড়ে এবং তদন্তে নামে পুলিশের একটি দল। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে অপহরণকারীরা সকলে বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা। তাই লাভপুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা তদন্তের কাজ এগোতে থাকেন। একে একে ধরা পড়ে অপহরণকারী – শ্যামল মণ্ডল, জাকির খান, মহম্মদ হানিফ, মনজারুল হক। গ্রেপ্তার হন অপহরণের মূল পরিকল্পনা করা ব্যক্তি অভিজিৎ ঘোষও।ধৃতদের জেরা করে পুলিশ আরও জানতে পারে, অভিজিৎ টাকা ফেরতের জন্যই বাকি পাঁচজনকে নিয়োগ করে। এরা প্রত্যেকেই একে অন্যের পরিচিত। এদের মধ্যে চুক্তি হয় যে চাকরির জন্য দেওয়া এক কোটি টাকা উদ্ধার হলে তার ৪০ শতাংশ পাবে অপহরণের কাজে যারা সরাসরি যুক্ত। এসব দেখেশুনে পুলিশ কর্তারাও রীতিমত বিস্মিত হচ্ছেন। প্রতারককে শাস্তি দিতে গিয়ে প্রতারিতই যে অপহরণকারী হয়ে উঠবে, তা ভাবতে পারছেন না তদন্তকারীরা। ধৃতদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে কলকাতা পুলিশ।