চিনে পাচার হওয়ার আগেই বিপুল পরিমাণ ‘হিউম্যান হেয়ার’ বা মানুষের চুল আটক করল শুল্ক দপ্তর। এর মূল্য লক্ষাধিক টাকা বলে জানিয়েছে তারা। মায়ানমার হয়ে তা চীনে পাঠানো হতো বলে জানা গিয়েছে। কাদের মাধ্যমে তা যেত, সেই তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে। তবে এর পিছনে যে বড় একটি চক্র রয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। ‘হিউম্যান হেয়ার’-এর চোরাচালান বিগত কয়েকমাসে ভালোরকম বেড়ে গিয়েছে বলে জানতে পেরেছে শুল্ক দপ্তর। এর বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে সরব হন ‘হিউম্যান হেয়ার’ রপ্তানিতে জড়িত ব্যবসায়ীরা। তাঁরা কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করেন, চোরাকারবার বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। চোরাপথে কলকাতা হয়ে তা চিনে যাচ্ছে। এমনকী বাংলাদেশ থেকেও কাঁচামাল আসছে এখানে। মূলত মায়ানমার সীমান্ত দিয়েই এই কারবার চলছে। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে শুল্ক দপ্তরের কাছে নির্দেশ আসে, মানুষের চুলের এই চোরাকারবার বন্ধ করার জন্য। কেন্দ্রীয় সংস্থাটি এরপরই সক্রিয় হয়। তার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ সীমান্ত ও উত্তর পূর্ব ভারতে যে সমস্ত ট্রেন বা বাস যাচ্ছে, তার উপর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের কাছে খবর আসে, বিপুল পরিমাণ মানুষের চুল আসছে শহরে। এখান দিয়ে তা চলে যাবে চিনে। খবর পেয়ে তাঁরা নজরদারি চালাচ্ছিলেন। কয়েকটি জায়গায় তল্লাশিও চালান। তা করতে গিয়েই একটি জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ ‘হিউম্যান হেয়ার’ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। ট্রান্সপোর্ট বুক করে এই সামগ্রী পাঠানো হচ্ছিল, যাতে চোরাকারবারে যুক্তদের ধরা না যায়। তদন্তে উঠে আসছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষের চুল সংগ্রহ করে তা জমা করা হয় কলকাতায়। এখানে তা প্যাকেজিং করা হয়। তারপর তা পাঠানো হয় উত্তর পূর্ব ভারতে। এরপর অসম বা মিজোরাম হয়ে তা যাচ্ছে মায়ানমারে। শহরের একাধিক ব্যক্তি এই কারবারে জড়িত। তাদের মাধ্যমেই তা পৌঁছচ্ছে চিনে। বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন হচ্ছে। যারা হিউম্যান হেয়ারের চোরাকারবারে জড়িত, তাদের মাধ্যমেই আবার মায়ানমার থেকে চোরাই সোনা ও নিষিদ্ধ মাদক ট্যাবলেট আসছে। মানুষের চুল বিক্রি করে মেলা অর্থেই এই সোনা বা মাদক কেনা হচ্ছে।