এক দেশ, এক নির্বাচন চালু করার মধ্য দিয়ে দেশে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের গোপন চেষ্টা চালাচ্ছে মোদি সরকার। এক দেশ, এক নির্বাচন নিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর জানাল তৃণমূল। একসঙ্গে নির্বাচন করা নিয়ে আগেই চিঠি লিখে আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। আজ দিল্লিতে যোধপুর অফিসার্স হস্টেলে রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটির সঙ্গে বৈঠকে এক দেশ, এক নির্বাচন নিয়ে আপত্তি জানালেন দলের দুই প্রবীণ সাংসদ সুদীপ ব্যানার্জি এবং কল্যাণ ব্যানার্জি। তৃণমূলের তরফে, দল বিরোধী আইন আরও শক্তিশালী করার দাবি জানানো হয়েছে। সুদীপ ব্যানার্জি জানিয়েছেন, তাঁদের মতামত গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং প্রশংসা করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমে সুদীপ ব্যানার্জি বলেন, “আমরা এক দেশ, এক নির্বাচনের পক্ষে নই। আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি, ভারতবর্ষের মতো একটা এত বড় দেশ। এখানে ৮টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল রয়েছে। দেশের জনসংখ্যা ১৪০ কোটি এবং এতগুলি রাজনৈতিক দল রয়েছে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটি নিয়ে সবচেয়ে সমস্যা, সেটি দল বিরোধী আইন। সেই আইনকে আরও শক্তিশালী করা হোক।” তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের অভিমত, ১৯৫২ সাল থেকে যে কয়েকটি নির্বাচন হয়েছে, সেখানে এতগুলি রাজনৈতিক ছিল না, এত দল ভাঙাভাঙি ছিল না। এখন স্পষ্ট হয়েছে, যে কোনও দলকে যে কোনও সময়ে ভাঙিয়ে সরকারের পতন ঘটিয়ে দেওয়া যায়। সুতরাং এই অবস্থায় দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র যাতে বিপন্ন হয়ে না পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অক্ষুন্ন রাখতে সে ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে। আমরা আশঙ্কা করেছি, দেশে রাষ্ট্রপতির শাসনের সরকার গঠনের একটা উদ্যোগ শুরু হয়েছে। তারই পদক্ষেপ এই গোপন অ্যাজেন্ডা। এই অ্যাজেন্ডা এবং এই এক নায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্তকে একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে এসে তাকে পরবর্তীকালে প্রকৃত রূপ দেওয়া হবে। কোনও অবস্থাতেই আমরা মনে করি না ভারতবর্ষের মতো একটি দেশে এই ধরণের বিষয় কখনও কোনও অবস্থায় বাস্তবায়ন করা উচিত।”
সুদীপ ব্যানার্জির দাবি, তৃণমূলের দুই সাংসদের মতামত গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন কমিটির চেয়ারম্যান রামনাথ কোবিন্দ। সুদীপের দাবি, তাঁদের বক্তব্য থেকে অনেক নতুন দিক উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সুদীপ বলেন, “প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং কমিটির চেয়ারম্যান আমাদের বলেছেন, আমরা অনেক বিষয় নতুন করে তুলেছি, যেগুলি প্রশংসনীয়।”