কলকাতা

‘নির্বাচন কমিশন নিষ্ক্রিয়’! ভোটে জিততে এনআইএর সঙ্গে বিজেপির ‘আঁতাঁত’, রাজ্যপাল বোসকে কড়া চিঠি অভিষেকের

সোমবার রাতে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিল তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। দলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার অভিষেকের চিঠি গেল রাজভবনে। চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের কোন কোন কার্যকলাপে তৃণমূল আপত্তি তুলেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে হাতিয়ার করে বিজেপি ভোটে জেতার চক্রান্ত করছে বলেও চিঠিতে অভিষেকের দাবি। ভোটের মুখে NIA, সিবিআই, ইডি ও আইটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন তিনি। বাদ গেল না NIA-এ এসপির সঙ্গে বিজেপির নেতা জিতেন তিওয়ারি বৈঠকের প্রসঙ্গও।ঘটনার সূত্রপাত গতকাল, সোমবার। দিল্লিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেছিল তৃণমূল ১০ সদস্যের প্রতিনিধিরা। কিন্তু স্মারকলিপি দেওয়ার পর যখন বাইরে ধরনায় বসেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেনরা, তখন তাঁদের রীতিমতো টেনে হিঁচড়ে পুলিস প্রিজন ভ্য়ানে তোলে বলে অভিযোগ। এরপর রাতেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক। সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধিরাও। রাজভবন থেকে বেরিয়ে কমিশনকে নিশানা করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে যে সরকারটা রয়েছে. সে সরকারের দায় এখন নয়। পুরো ব্যবস্থটাই যে মুহুর্ত থেকে নির্বাচন ঘোষণা হয়, চলে যায় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। শান্তিপূর্ণভাবে ১০ জন যদি বসে প্রতিবাদ জানায়, তাঁদের হাতে কি ছিল? বোমা, বন্দুক, লাঠি! দোলার সেনের পায়ে অপারেশন হয়েছে ২ সপ্তাহ আগে। তাঁকে টানতে টানতে অমানবিকভাবে নিয়ে গিয়েছে। ডেরেক ও’ব্রায়নকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে গিয়েছে দিল্লি পুলিস’।  আজ, মঙ্গলবার চিঠি দিলেন রাজ্যপালকে। চিঠিতে অভিষেক মূলত পাঁচটি বিষয় তুলে ধরে লিখেছেন, প্রথমত, কী করে এনআইএ, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দফতরকে বিজেপি ব্যবহার করছে। দ্বিতীয়ত, এনআইএর ধনরাম সিংহের সঙ্গে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি গোপন বৈঠক করেছেন। অভিষেকের দাবি, বৈঠকে তৃণমূল কর্মীদের বেআইনি ভাবে নিশানা করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তৃতীয়ত, বার বার তৃণমূল অভিযোগ করলেও তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা। চতুর্থত, দিল্লিতে প্রতিবাদরত তৃণমূল নেতাদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ বেআইনি ভাবে আটক করে রাখা। এবং পঞ্চমত, মানবিকতার খাতিরে ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকার মানুষের ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য তহবিল মঞ্জুর করার প্রয়োজনীয়তা। অভিষেক চিঠিতে লিখেছেন, এই বিষয়গুলি সঠিক ভাবে পালিত না হলে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। তাই রাজ্যপাল যেন এ বিষয়ে যথোচিত পদক্ষেপ করেন। অভিষেকের দাবি, রাজ্যপাল যেন কমিশনকে নির্দেশ দেন যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যাতে জরুরি তহবিল থেকে ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবিত মানুষদের স্বার্থে অর্থ প্রদান করতে পারে। এ ছাড়াও, এনআইএ, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দফতরের ডিরেক্টরকে বদল, এনআইএর এসপি ধনরাম সিংহকে অন্যত্র বদলির দাবিও তুলেছেন অভিষেক। একই সঙ্গে, কেন্দ্রীয় এজেন্সি ভোটের মুখে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যাতে কোনও পদক্ষেপ করতে না পারে, তা-ও নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন অভিষেক।  এদিকে নির্বাচন কমিশনের সামনে থেকে তুলে দেওয়ার দিল্লির মন্দিরমার্গ থানায় ধরনায় বসেছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। কর্মসূচি ছিল ২৪ ঘণ্টা। ধরনা শেষ হল আজ, মঙ্গলবার।