জেলা

রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত, ট্রেনে কবজ সিস্টেম ছিল না কেন? প্রশ্ন অভিষেকের

সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন খোদ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কেন্দ্রের দাবি ছিল, রেলে দুর্ঘটনা রোধে ব্রহ্মাস্ত্রের মতো কাজ করবে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী প্রযুক্তি ‘কবচ’। শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর এই ‘কবচ’ই কাঠগড়ায়। আদৌ দুর্ঘটনা রুখতে সক্ষম তো রেলের এই আধুনিক প্রযুক্তি? উঠছে প্রশ্ন। যদিও দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনগুলিতে ‘কবচ’ ছিলই না।  শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল আপ এক্সপ্রেস। এই মর্মান্তিক ঘটনায় মৃতের সংখ্যা প্রায় তিনশো। আহত হাজারের বেশি। বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মোদি সরকারের পাশাপাশি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে তুলোধনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দুর্ঘটনায় দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের- তোপ দাগেন অভিষেক। ট্রেনে অ্যান্টি কোলিশন ডিভাইস বা কবচ সিস্টেম থাকলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে মত অভিষেকের। প্রসঙ্গত শুক্রবার সন্ধেয় ওড়িশার বালেশ্বর শতাব্দীর সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনার কারণে শনিবার, তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি দিনের মতো বাতিল করেন অভিষেক। তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে গত একমাসের বেশি সময় ধরে বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণ চষে বেড়াচ্ছেন। এদিন হাওড়া জেলায় পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বাগনান, শ্যামপুর-সহ একাধিক জায়গায় তাঁর কর্মসূচি করার কথাছিল। এদিন বাগনানে লাইব্রেরি মোড় থেকে খালো কালীবাড়ি পর্যন্ত মিছিল করে গিয়ে কালীবাড়িতে পুজো দেন। সেখানেই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপরই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন, দিনের মতো পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলি বাতিল। সেখানেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক। অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, “গত দু’দশকে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেনি। করমণ্ডল এক্সপ্রেস যেন মৃত্যুমণ্ডল হয়ে গিয়েছে। কত নিরাপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর দায় কে নেবে?” যে ২০০ জন নিরীহ যাত্রী প্রাণ হারালেন, তাঁর দায় কার! রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন অভিষেক। তাঁর প্রশ্ন, কেন দায় নিয়ে পদত্যাগ করবেন না রেলমন্ত্রী! তিনি দুহাতে দুটি ট্রেনের মডেল নিয়ে দেখিয়ে ছিলেন ট্রেনে সুরক্ষা কবজ লাগানো হচ্ছে। মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানো যাবে। কিন্তু সেই ডিভাইস বসানো হয়নি। অথচ ২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই এই যন্ত্রের জন্য টাকা বরাদ্দ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য “কবচ”র সুবিধা ছিল না এই রুটে। কবচ পরিষেবা থাকলে দুটি ট্রেনের মুখোমুখ সংঘর্ষ যেমন এড়ানো সম্ভব, তেমন পিছন থেকে ধাক্কা লাগলে, তাও সামলে দেওয়া সম্ভব। Signal Passing At Danger (SPAD) এড়াতে সাহায্য করতে পারে এই ব্যবস্থা। ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ও আপৎকালীন ব্রেক কষতেও সাহায্য করে কবচ পরিষেবা। বালেশ্বরের রেলওয়ে মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, “দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ প্রতিরোধকারী কবচের সুবিধে এই রুটে উপলব্ধ ছিল না। বর্তমানে এই কবচের সুবিধা শুধুমাত্র হাওড়া – দিল্লি ও দিল্লি – মুম্বই লাইনে উপলব্ধ রয়েছে। সব লাইনে এই কবচের সুবিধে নেই।” প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে ATP চালুর বড় বড় বিজ্ঞাপন করা হলেও তা কেন এই গুরুত্বপূর্ণ রুটে ছিল না? এর দায় কার?