কলকাতা

মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে আরও কঠোর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

 চলতি বছর মাধ্যমিক নিয়ে আরও কঠোর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোতায়েন পুলিশ কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে যে মোবাইল থাকবে না, সেকথা আগেই জানানো হয়েছিল। এবার নেওয়া হল নয়া সিদ্ধান্ত—পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা বলয়ে রাখা হবে না সিভিক ভলান্টিয়ারদের। থাকবেন শুধু পুলিস কর্মীরা। স্কুলস্তরের প্রথম বড় পরীক্ষায় নিরাপত্তা ‘নিশ্ছিদ্র’ করতে এই উদ্যোগ। কারণ, সাধারণত স্থানীয়দেরই সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ফলে কোনও না কোনওভাবে তাঁরা প্রভাবিত হয়ে যেতে পারেন। তাই আগাম সতর্ক থেকে সেই সামান্যতম সম্ভাবনাও এবার এড়াতে চাইছেন পর্ষদ সভাপতি অধ্যাপক রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি সদাসতর্ক থাকতে চালু করা হচ্ছে ‘রিয়েল টাইম’ অ্যাপ। তার মাধ্যমে ভেন্যু সুপারভাইজারদের প্রতিনিয়ত খবরাখবর নেওয়া সম্ভব হবে। অতীতের নানা ঘটনার জেরে বিশেষভাবে নজরে রাখা হচ্ছে মালদহকে। রাজ্যের একমাত্র ওই জেলাতেই পর্ষদ ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স, যা প্রায় বেনজির। সেখানে একাধিক হটস্পট চিহ্নিত করে প্রায় প্রতিদিন রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের। শুধু তাই নয়, পর্ষদ সভাপতি রামানুজবাবু পর্যন্ত দিনছয়েক ধরে মালদহে। রীতিমতো ‘ওয়ার রুম’ বানিয়ে পড়ে থেকেছেন। প্রশাসনিক বৈঠকের বাইরেও গোপনে সরেজমিন তদন্ত সেরেছেন একাধিক পরীক্ষাকেন্দ্রের। আজ, শুক্রবারই তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা। মালদহে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের সরকারি স্কুলে রেজিস্ট্রেশন করে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ানো হয়। সেই স্কুলগুলিকে এবার আতশকাচের তলায় রেখেছে পর্ষদ। রামানুজবাবু সাফ জানিয়েছেন, পরীক্ষা পদ্ধতির মূলগত কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। কিন্তু আয়োজনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বদল করা হচ্ছে। অনেকগুলি নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য একটাই, স্বচ্ছ পরীক্ষা। আর একাজে যে কোনওরকম অসহযোগিতায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হবে। মাধ্যমিক পরীক্ষার আয়োজন নিয়ে সাম্প্রতিককালে সমালোচনার মুখে পড়েছে পর্ষদ। নতুন সভাপতির তত্ত্বাবধানে সেই সমস্ত ক্ষেত্র পর্যালোচনা করে মাধ্যমিক পরীক্ষার নতুন নীলনকশা বানানো হয়েছে। নয়া সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার পর্ষদের এক কর্তা বলেন, পরীক্ষা ব্যবস্থায় পার্শ্বশিক্ষকরা যুক্ত থাকেন না। তাহলে পুলিস কর্মীর পরিবর্তে সিভিক ভলান্টিয়াররাই বা কেন থাকবে? সেই যুক্তিতে এবার স্পষ্টভাবে তাদের পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে দূরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যও হাতে রেখেছে পর্ষদ। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। 
ভেন্যু সুপারভাইজারদের জন্যও থাকছে কড়া নিয়ম। অতীতে প্রশ্নপত্র সংগ্রহে ‘অথরাইজেশন’ পদ্ধতি চালু ছিল। এবার তা বাতিল করা হয়েছে। ভেন্যু সুপারভাইজারদের কাছে থাকবে পর্ষদের দেওয়া বিশেষ অ্যাপ। তাতে ‘রিয়েল টাইম ডেটা’ পাবে পর্ষদ। কখন প্রশ্নপত্র পৌঁছল, কখন তা খোলা হল, কোনও বিপত্তি ঘটল কি না, সে সবই সরাসরি জেনে নিতে পারবে পর্ষদ।