করোনা আবহের মধ্যেও থমকাবে না রাজ্যের উন্নয়ন
কলকাতাঃ আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে করোনা। বদলাতে পারে পরিস্থিতি। বিশেষজ্ঞদের এমনই ধারনার কথা বলে আশা প্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বললেন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে তখন আবার জেলায় গিয়ে কাজের তদারকি করতে পারবেন। আজ কলকাতা পুরসভার পদ্ধতিতে একটি নতুন সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা হিসাব দিয়েছেন জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে ৩৫ শতাংশ স্বাভাবিক মৃত্যুর হার কমেছে। কিন্তু যাঁদের মৃত্যু হচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে তাঁদের করোনা ছিল না। অন্য কোনও অসুখ নিয়ে ভর্তি হয়ে দুর্বলতার কারণে বা হাসপাতালে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, দেখতে হবে যাতে হাসপাতাল থেকে করোনা না নিয়ে ফেরেন। একইসঙ্গে মৃত্যুর হার কমাতে রোগ আলাদা করে কীভাবে নির্ণয় করা যায়, তারও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। বিশেষজ্ঞ কমিটি হোক বা স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা, জেলায় হাসপাতাল ঘুরে দেখতে হবে। মৃত্যুর হার কমাতে হবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার বিষয়েও আইসিএমআরের গাইডলাইন মেনে চলতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। টানা তিনদিন জ্বর না থাকলে আর কোনও করোনা রোগীকে হাসপাতালে রাখা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, এই গাইডলাইন মানতে হবে। তাতে শয্যা বাড়বে। আবার ডিসচার্জ রেটও বাড়বে। নতুন করে স্বাস্থ্যবিমার কভারেজের সময় সেপ্টেম্বর থেকে বাড়িয়ে নভেম্বর পর্যন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি এই কাজ করতে গিয়ে বিডিও, পুলিশের মধ্যে অনেকেই সংক্রমিত হচ্ছেন। তাঁদের শরীরের দিকও নজর দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডেঙ্গু মোকাবিলায় শহরের নিকাশি ও বিভিন্ন খালে জমে থাকা আবর্জনা নিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এছাড়া এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা থাকবে, তাই বলে কাজ ফেলে রাখা যাবে না। কয়েক মাস পরেই নির্বাচন। নির্বাচন আসবে যাবে, সরকার থাকবে আপনারা থাকবেন, উন্নয়ন থেমে থাকবে না। তাই দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে হবে।’ ১০০ দিনের কাজ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কাজ করেছিল ১০০ দিনের কাজে, তাদের টাকা যেন বাকি না থাকে। কারণ এই সময় টাকা বাকি রাখা ঠিক নয়।’ তাই ৭ দিনের মধ্যেই টাকা দিয়ে দিতে নির্দেশ দেন তিনি। বাংলা সড়ক যোজনায় দ্রুত কাজ এগোনোরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট যে রাস্তা রয়েছে তার উপর নজর দিতে হবে। ছোট রাস্তায় বড় গাড়ি কোন রকম ভাবে অ্যালাউ করা যাবে না।’ রাস্তার কাজ নিয়ে তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘লজ্জা করে না শুনতে? কাজের অগ্রগতি এত কম কেন?’ করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ স্বাস্থ্যব্যবস্থা। সেই উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘অন্য রাজ্য থেকে কেউ এলে, তাদেরও চিকিত্সা করতে হবে। কিন্তু তাদের ঠিকানা লিখুন।’


