চীনের মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং-এ তিনজন নভোচারীকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে চীন। দেশটির এমন পদক্ষেপ ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে মনুষ্যবাহী মিশনের দিকে চীনকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার দেশটির স্থানীয় সময় বিকাল ৫.১৭ মিনিটে গোবি মরুভূমির জিউকুয়ান স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ‘লং মার্চ-২এফ’ রকেটে করে ‘শেনঝো ২০’ মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করে চীন। তিন দশকেরও বেশি সময় আগে শুরু হওয়া শেনঝু প্রোগ্রামের ১৫তম মনুষ্যবাহী মহাকাশযাত্রা এবং সার্বিকভাবে চীনের ২০তম মহাকাশ অভিযান। ‘তিয়ানগং’ মহাকাশ স্টেশনটি মহাকাশে চীনকে একটি বড় প্রতিযোগী করে তুলেছে, বিশেষ করে মার্কিন জাতীয় সুরক্ষার উদ্বেগের কারণে দেশটিকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বাদ দেওয়ার পরে চীন একাই বানিয়েছে এ স্টেশনটি। এ মহাকাশ স্টেশনটি নিয়ন্ত্রিত হয় চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক শাখা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’র মাধ্যমে। ২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পর তৃতীয় দেশ হয়ে উঠেছে চীন, যেখানে মহাকাশ কর্মসূচিতে অবিচলিত গতিতে এগিয়ে গিয়েছে দেশটি। মঙ্গল গ্রহে একটি যান এবং চাঁদের দূরবর্তী পাশে একটি রোভারও পাঠিয়েছে চীনের এই মহাকাশ সংস্থাটি। তাদের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের আগে একজন মানুষকে চাঁদে পাঠানো। শেনঝো বা ‘সেলেস্টিয়াল ভেসেল’ নামের এই ২০তম মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেন ডং। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মহাকাশে গেলেন তিনি। ‘চায়না ম্যানড স্পেস এজেন্সি’ বলেছে, তার সঙ্গে রয়েছেন ফাইটার জেটের পাইলট চেন ঝংরুই ও প্রকৌশলী ওয়াং জি। বর্তমানে চীনা মহাকাশ স্টেশনে থাকা তিন নভোচারীর স্থলাভিষিক্ত হবেন তারা এবং সেখানে তাদের প্রায় ছয় মাস থাকতে হবে। উৎক্ষেপণের পর মহাকাশযানের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাতে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা লাগে। গত বছরের অক্টোবরে এই তিন নভোচারীকে পাঠানো হয়েছিল এবং তারা সেখানে ১৭৫ দিন ছিলেন। আগের নভোচারীদের ২৯ এপ্রিল পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা রয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে পুরোপুরি তৈরি হওয়া তিয়ানগং স্টেশনে একবারে ছয়জন নভোচারী থাকতে পারেন এমন ব্যবস্থা আছে। চীনের মহাকাশ সংস্থাটি বলেছে, মহাকাশে থাকাকালীন নভোচারীরা চিকিৎসা বিজ্ঞান ও নতুন প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ও নতুন টুল বসানোর জন্য স্পেসওয়াক করবেন।
