জেলা

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত দিঘা এবং সুন্দরবন

পশ্চিমবঙ্গ এবং ওডিশা উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে এই ঘূর্ণিঝড় বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বুধবারই দিঘা উপকূল ছুঁয়ে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাবে সুপার সাইক্লোন আমফান। সুপার সাইক্লোনে রূপ নিলে এই ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৬৫ কিলোমিটার। আর উপকূলের দিকে এগোতে থাকলেই রূপ নেবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। আমফানের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা ও কাঁথি উপকূলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূল এলাকার রামনগর, কাঁথি এবং খেজুরিতে চূড়ান্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। উপকূল এলাকার ২৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। আজ সকাল থেকে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ শুরু করবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। জেলাশাসক বলেন, ‘‌করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই যাতে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারেন সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। এ জন্য ৪৩টি রেসকিউ সেন্টার, ৩০টি ফ্লাড শেল্টার সহ ২৫০টি স্কুল বিল্ডিং প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে উপকূল এলাকার ব্লকগুলোতে। পর্যাপ্ত ত্রিপল ও ত্রাণ মজুত করা হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে পরিস্থিতির ওপর। বিদ্যুৎ, পানীয়জল সহ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’‌ অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত গোটা সুন্দরবন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রকে পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টিন সেন্টার করা হয়েছে। তাই সুন্দরবনে আমফান দুর্গতদের প্রাথমিকভাবে স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাব থেকে বাঁচাতে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি প্রভৃতি জায়গায় মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর কাজও শুরু করেছে প্রশাসন। বিভিন্ন দ্বীপে পৌঁছে গেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। লক্ষাধিক মানুষকে সরাতে হবে রেসকিউ সেন্টারে। কারণ ঝড়ের তীব্রতা আগের কয়েকটি ঝড়ের থেকে যথেষ্ট বেশি থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা। তাই বহু মানুষকে উপকূল থেকে সরিয়ে আনার কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে। আপাতত তাদের রাখা হচ্ছে বিভিন্ন প্রাথমিক এবং উচ্চবিদ্যালয়গুলিতে। ঝড়ের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রতিটি পঞ্চায়েতকে জরুরি ভিত্তিতে কন্ট্রোলরুম খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের যে নদীবঁাধগুলির অবস্থা খারাপ, সেগুলি দ্রুত মেরামত করার কাজও চলছে।