কলকাতা

রাজ্যপালের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর, বললেন নির্বাচন কমিশনারকে সরাতে হলে ইমপিচ করতে হবে

গতকাল, বুধবার রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটে নাগাদ মহাজোট বৈঠকে যোগ দিতে পাটনা যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে পদ থেকে অপসারণ সহজ নয়। তাঁকে সরাতে গেলে ইমপিচ করতে হবে।

বুধবার গভীর রাতে বেনজির সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠান তিনি। এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সরাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে। রাজীব সরে যাচ্ছে, এমন কোনও খবর নেই। এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি, এটা অভূতপূর্ব ঘটনা। মমত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, যত এজেন্সির মাধ্যমে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হবে, ততই মানুষ তৃণমূলের পাশে থাকবে। লড়ে জয়ী হবে তৃণমূল। শুক্রবারের বিরোধীজোটের বৈঠকে যোগ দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পাটনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও । তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রস্তাব মতোই শুক্রবার পাটনায় কেন্দ্রের বিরোধীজোটের প্রথম বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে নেতাজি সুভাষ বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠানোর খবর তিনি জানেন না। তবে, নির্বাচন কমিশনারকে সরানো অত সহজ নয়। ইমপিচমেন্ট করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজীব সিনহাকে পদে বসাতে কেউ জোর করেনি। রাজ্যপাল নিজেই তাঁকে নিয়োগ করেন। এরপরেই কেন্দ্র ও বিজেপিকে একহাত নেন তৃণমূল সভানেত্রী। তাঁর অভিযোগ, এজেন্সি-সহ বিভিন্ন ভাবে রাজ্য সরকারকে হেনস্থা করা হচ্ছে। রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরেই বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়ন জমা পড়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার পঞ্চায়েত ভোটে ২লক্ষ৩৬হাজার মনোনয়ন পত্র জমা পড়েছে। ৭১হাজার বুথের মধ্যে ৪টে গোলমাল হয়েছে। আর সেটাকেই হাতিয়ার করে রাজ্যের বিরুদ্ধে সব এজেন্সিকে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে- অভিযোগ তৃণমূল সুপ্রিমোর। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, বাংলার পুলিশ যে কোনও রাজ্যের পুলিশ থেকে বেশি দক্ষ। এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যত খুশি বাহিনী আসুন, তার সংখ্যা মানুষের থেকে বেশি হবে না। যাই করুক, ভোটে শেষ কথা বলবে মানুষ। আমরা লড়ে নেব, জিতে নেব।“ শেষে বাংলার মানুষের কাছে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে শান্তিতে, সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের বার্তা দেন তিনি।