‘ড্রোন-ডিটেক্ট, ডিটার অ্যান্ড ডেসট্রয়’। পোশাকি নাম ডি৪। যেন কোনও অদৃশ্য জাল। দেশীয় প্রযুক্তিতে ডিআরডিও বিজ্ঞানীদের তৈরি এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম কামাল দেখাচ্ছে। পাকিস্তানের ছোড়া তুর্কি ড্রোনের দাঁত ভেঙে দিচ্ছে মাঝ আকাশেই। ফলে রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এস-৪০০-এর পাশাপাশি ভারতে তৈরি এই ডি৪ সিস্টেমও এখন পাকিস্তানের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। হামাসের রকেট হামলা ভেস্তে দিতে ইজরায়েলের ব্যবহৃত ‘আয়রন ডোম’ শিল্ড নিয়ে চর্চা বিশ্বজুড়ে। ভারতের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীদের তৈরি ডি৪ সিস্টেমও ইজরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ শিল্ডের থেকে কোনও অংশে কম নয়। যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসা সেইসব পাক ড্রোনকে আকাশেই খতম করে দিচ্ছে ডি৪। দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দ্রুত একটি অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিজেদের ছ’টি ল্যাবকে একযোগে কাজে লাগিয়েছিল ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। এই ছ’টি ল্যাব পৃথক পৃথক বিষয়ে গবেষণায় পারদর্শী। মানববিহীন উড়ন্ত যানকে শনাক্ত করার পর তাকে মাঝ আকাশেই ধ্বংস করে দিতে মাল্টি-সেন্সর ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। সেই প্রচেষ্টার ফল হল ডি৪। দেশীয় প্রযুক্তিতে এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম গড়ে তোলার পর তা তিন বাহিনীতেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে এখন তারই সুফল পাচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। মাঠে মারা পড়ছে তুরস্ক থেকে কেনা পাকিস্তানের ড্রোন। কিন্তু মাঝ আকাশে কীভাবে শত্রু দেশের ড্রোন শনাক্ত করে তা শেষ করে দিচ্ছে ডি৪-এর অদৃশ্য জাল? একটি ড্রোন সাধারণত নিজের অবস্থান ও লক্ষ্যবস্তু বিচার করে কাজ করে। জিপিএস ব্যবহার করে ড্রোন সেই কাজ চালায়। ভারতের তৈরি ডি৪ সিস্টেম এতটাই অত্যাধুনিক যে সেটি ড্রোনের জন্য প্রয়োজনীয় জিপিএস সিগন্যাল আটকে দিয়ে তাকে ধন্দে ফেলে দেয়। ফলে মাঝ আকাশেই শেষ হয়ে যায় উড়ে আসা ড্রোন। এটিকে বলে ডি৪-এর ‘সফ্ট কিল’ দক্ষতা। কিন্তু তাতে কাজ না হলে মাঠে নামে এই অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থার ‘হার্ড কিল’ সিস্টেম। প্রচণ্ড শক্তিশালী লেজারকে অস্ত্র করে শত্রু ড্রোন শেষ করে দেয় ডি৪।
