দেশ

দিল্লিতে মেয়র নির্বাচন ঘিরে আপ ও বিজেপি কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতি, পিছিয়ে গেল ভোট

 শুক্রবার মেয়র পেল না দিল্লি। পুর অধিবেশনে আপ এবং বিজেপি কাউন্সিলরদর হাতাহাতির জেরে স্থগিত হয়ে গেল মেয়র নির্বাচন প্রক্রিয়া।  । নিয়ম অনুযায়ী, পুরনির্বাচনের আগেই দিল্লির উপ রাজ্যপাল ১০ জনের নাম মনোনীত সদস্য হিসাবে ঘোষণা করতে পারেন। সেই মতো দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা ইতিমধ্যেই ১০ জনকে মনোনীত করেছেন।শুক্রবার গণ্ডগোল বাঁধে যখন সাক্সেনা মনোনীত তদারকি স্পিকার তথা বিজেপি নেতা সত্য শর্মা এদিন মেয়র ভোটের আগেই মনোনীত পুরসদস্যদের শপথগ্রহণ করার তোড়জোড় শুরু করেন। একজন পুরসদস্যের নাম শপথগ্রহণের জন্য ঘোষণা হওয়া মাত্রই বিষয়টির ঘোরতর বিরোধিতা করে ওয়েলে নেমে পড়েন আপ কাউন্সিলরেরা। এরপরেই দু দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ধাক্কাধাক্কি, মারপিট। স্লোগান, পাল্টা স্লোগান উঠতে থাকে অরবিন্দ কেজরীওয়াল ও নরেন্দ্র মোদির নামে। পরিস্থিতি বুঝে মেয়র নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয় এদিনের মতো। আপ অভিযোগ তুলেছে, মেয়র নির্বাচনে বিজেপি যাতে বাড়তি সুবিধা পায়,তার জন্যই এই ভাবে আগেভাগে শপথগ্রহণ করানো হচ্ছিল মনোনীত সদস্যদের। তাদের দাবি, MCD-র ইতিহাস বলছে, মনোনীত সদস্যেরা কখনওই কোনওদিন এভাবে আগে শপথগ্রহণ করেননি। যদিও দিল্লির মেয়র নির্বাচন নিয়ে যে গণ্ডগোল একটা পাকতে পারে, তার আভাস মিলেছিল আগে থেকেই। আম আদমি পার্টির তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল,দিল্লির সরকারের সঙ্গে কোনও রকমের আলাপ আলোচনা না করে বিজেপি ঘেঁষা ১০ জনের নাম দিল্লি পুরনিগমের মনোনীত সদস্য হিসাবে ঘোষণা করে দিয়েছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর। যা অনৈতিক বলে দাবি করে আপ। গতকাল ট্যুইট করে এ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টচির মুখ্য আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরীওয়ালও।অন্যদিকে, বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারির দাবি করেন, “যা হয়েছে সংবিধান মেনেই করা হয়েছে। ওরা (আপ) গণ্ডগোল বাঁধাচ্ছে, কারণ ওঁরা জানে যে ওঁদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। ওঁদের নিজেদের কাউন্সিলরদের উপরেই ওঁদের ভরসা নেই।” সবমিলিয়ে এখন জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দিল্লি পুরসভার মেয়র নির্বাচন ঘিরে।দিল্লি পুরসভার মেয়র পদে আপ প্রার্থী করেছে প্রথম বার কাউন্সিলর নির্বাচনে জয়ী হওয়া শেলি ওবেরয়কে। ৩৯ বছর বয়সি শেলি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা। ‘বিজেপির ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত পূর্ব দিল্লির পটেলনগর এলাকার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন তিনি। ডেপুটি মেয়র পদে আপের প্রার্থী আলে মহম্মদ খান। আপ নেতা তথা ৬ বারের বিধায়ক শোয়েব ইকবালের ছেলে এ বার চাঁদনি মহল এলাকা থেকে ১৭ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন। দিল্লি পুরসভার ২৫০টা আসন হলেও এখানে রাজ্যসভার ৩ জন ও লোকসভার ৭ জন সাংসদ এবং ১৪ জন বিধায়কের ভোটাধিকার রয়েছে। অর্থাৎ, মোট ২৭৪টি ভোটের মধ্যে যে দল ১৩৮টি ভোট পাবে, সেই দলের প্রার্থীই মেয়র পদে জয়ী হবেন। অঙ্কের হিসাবে ১৩৪ জন কাউন্সিলর, রাজ্যসভার তিন জন সাংসদ এবং‌ ১৩ জন বিধায়কের ভোট আপের পক্ষে রয়েছে। অর্থাৎ, সবাই ভোট দিলে ১৫০টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচনে আপের প্রার্থীরই জেতা উচিত।