বাংলায় এসেছেন। অতএব বাংলায় কথা বলতেই হবে, এমন ধৃষ্টতা দেখাননি। বরং আফসোস, শুরুতে বললে শুনতে হত, ‘‘কী বলল!’’ শেষে বলতে উঠে বলার মতো কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না! কারণ, তাঁর আগে মহেশ ভাট, শত্রুঘ্ন সিনহা, অনিল কাপুর, সোনাক্ষী সিনহা ছিলেন। তিনি যা যা লিখে এনেছেন সবাই সব বলে দিয়েছেন! তারপরেও ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব মঞ্চে প্রথম পা রেখে সবচেয়ে দামি কথা বলে গেলেন সলমন খান। বলিউড থেকে আগত আমন্ত্রিতদের সঙ্গে ছোট্ট আলোচনার আসর বসিয়েছিলেন। বলিউডে বাঙালি প্রতিভার কথা উঠলে তাঁদের কাদের নাম মন পড়ে? মহেশ থেকে অনিলের মুখে উঠে এসেছে অশোক কুমার, কিশোরকুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়, জয়া ভাদুড়ি বচ্চন, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় হয়ে হালের বিপাশা বসুর নাম। ওঁরা থামতেই ‘ভাইজান’ শুরু। একদম নিজস্ব ঢঙে বললেন, ‘‘তালিকাটা দীর্ঘ। অর্থাৎ, বলিউডে বাঙালিরা দাপিয়ে রাজত্ব করেছেন। এবার আমাদের পালা। এবার বাংলায় আমাদের সুযোগ দেওয়ার পালা। আমি টলিউডে এসে অভিনয় করতে চাই।’’ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ফেটে পড়েছে হাততালিতে। শুরু থেকেই এদিন তিনি জলবৎ তরলং। এই প্রথম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের থিম সং হয়েছে। শ্রীজাতর কথায়, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের সুরে গেয়েছেন অরিজিৎ সিং। সেই গানের তালে প্রথমে আসনে বসে মাথা দোলাচ্ছিলেন। নজরে পড়তেই সঞ্চালক জুন মালিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে তাঁকে পা মেলানোর অনুরোধ জানান। এক পলকের দ্বিধা। তারপরেই সপারিষদ তিনি হালকা চালে দুলে ওঠেন। ব্যস, স্টেডিয়ামের এমাথা থেকে ওমাথায় উল্লাস। এভাবেই এলেন, দেখলেন আর মন জয় করলেন সলমন। তিনি পা রাখার আগে থেকে তাঁর নামে ধ্বনি। বেরিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত কলকাতা নাম জপেছে ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’-এর। মঞ্চে এদিন তাঁকে সম্বর্ধনা জানান দেব অধিকারী। একই সঙ্গে সলমন মনে করিয়ে দেন, এর আগে ইস্টবেঙ্গল মাঠে আয়োজিত জলসায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে চলচ্চিত্র উৎসবে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখনই কথা দিয়েছিলেন, আসবেন। সেই কথা রেখেছেন। এর পরেই নিজের ছবির বিখ্যাত সংলাপ ধার করে বলে ওঠেন, ‘‘কারণ, এক বার আমি কাউকে কথা দিলে তার পর তার পর আর নিজের কথাও শুনি না।’’