কলকাতা

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, আবহাওয়া দফতর থেকে জারি চরম সতর্কতা

গতকাল যে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে তা আরো গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়েছে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এই নিম্নচাপটি উত্তর ও উত্তর- পূর্ব দিকে সরে ,আগামী মঙ্গলবার ২৫ অক্টোবর সকালে বাংলাদেশের বরিশালের কাছে ঘূর্ণিঝড় রূপে স্থলভুমিতে আঘাত করবে। রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ খবর জানান, আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এর দরুন রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে চলবে বৃষ্টি। তার সঙ্গে বইবে ঝড়ো হওয়া। সতর্কতা হিসেবে আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যটকদের সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে দীঘা, মন্দারমনি ও শংকরপুর এলাকায়। আবহাওয়া দফতর থেকে আগাম সর্তকতা দিয়ে জানানো হয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সহ কলকাতা ,হাওড়া ,হুগলী এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি(Rain) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর দরুন সব থেকে বেশি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের অধীনে থাকা সুন্দরবন এলাকা। আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে ,মঙ্গলবার যেহেতু অমাবস্যার ভরা কোটাল রয়েছে, তাই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় জলস্ফীতি দেখা দেবে। এর দরুণ কাঁচা বাড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটি, কাঁচা রাস্তা ভেঙে যেতে পারে এবং জলস্ফীতি হয়ে বহু এলাকা প্লাবিত হতে পারে ।এর দরুণ মাঠে থাকা ধান সহ অন্যান্য শস্যের ক্ষতি হতে পারে । আগামীকাল ২৪অক্টোবর সোমবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। এর পাশাপাশি ঝড়ো হওয়া বইতে পারে ঘন্টায় ৬০কিলোমিটার বেগে। যত সময়ে এগোবে তত এই ঝড়ের গতিবেগ বেড়ে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আগামী ২৫শে অক্টোবর মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাশাপাশি নদিয়া জেলাতে। আগামী মঙ্গলবার দুপুর থেকে ধীরে ধীরে দুর্যোগ কাটবে। কমবে ঝড়ো হওয়ার গতিবেগ এবং বৃষ্টিও ধীরে ধীরে থামবে। এমনটাই পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞদের। ইতিমধ্যে কলকাতা বন্দর সহ অন্যান্য বন্দর গুলিতেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে মৎস্যজীবীদের রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২৪ থেকে ২৫ অক্টোবর এই সময়ের মধ্যে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর এইসব এলাকাতে গড়ে ৩০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঘন্টায় ঝড়ো হাওয়া বইবে । দুর্যোগ চলাকালীন সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। কলকাতাতেও ভারী বৃষ্টির দরুন নিচু এলাকায় জল জমতে পারে এবং একইসঙ্গে যেসব এলাকায় বাড়িগুলি জরাজীর্ণ অবস্থা সেখান থেকে সাধারণ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর থেকে সুন্দরবন এলাকায় সব থেকে বেশি এই ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের দরুন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগাম আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, অমাবস্যার কোটালের দরুন সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে একই সঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকায় জলস্ফীতি দেখা দেবে।