শুক্রবার সকালের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা-মায়ের কোল খালি করে চলে গেল বড়িশা হাইস্কুলের ক্লাস টু-এর খুদে পড়ুয়া সৌরনীল সরকার৷ বেহালা দুর্ঘটনাকাণ্ডে ঘাতক লরির চালক, খালাসি সহ গ্রেফতার ১১। ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী’, জানালেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সৌরনীলের দেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়ার পরই মৃত শিশুটির বাড়িতে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ তাঁর ফোন থেকেই সৌরনীলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ছেলে হারানোর শোকে দীপিকাদেবী কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না৷ ছেলের নিথর দেহ সামনে দেখে মাঝে মধ্যেই সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন তিনি৷ ফলে সৌরনীলের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর৷ পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তাঁদের সান্ত্বনা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মৃত শিশুটির বাবার চিকিৎসারও সবরকম দায়িত্ব রাজ্য সরকার নেবে বলে পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ বেহালার বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। বাড়ি, হরিদেবপুরে। রোজ সকালে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে আসতেন বাবা। আজ, শুক্রবারও যাচ্ছিলেন। ঘড়িতে তখন ৭টা ১০। বেহালার চৌরাস্তার মোড়ে রাস্তা পেরনোর সময়ে বেপরোয়া গতির মাটিবোঝাই লরি পিষে দিয়ে চলে যায় সৌরনীল ও তাঁর বাবাকে! ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শিশুটির। গুরুতর জখম হন বাবা। এই ঘটনার পর রীতিমতো রণক্ষেত্রে চেহারা নিয়ে এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখে পড়ে পুলিস। ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় পুলিসের কমপক্ষে পুলিসে ৮ গাড়িতে। এমনকী, ভাঙচুর চলে বেশ কয়েকটি সরকারি বাসেও! ডায়মন্ড হারবার রোডে মৃতদেহ রেখে শুরু হয় অবরোধ। অভিযোগ, ঘটনার পর ঘাতক লরিটিকে ছেড়ে দেন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। চৌরাস্তায় ট্রাফিক গার্ডে অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন ক্ষুদ্ধ জনতা। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালান পুলিশকর্মীরা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে ছোঁড়ে পুলিশ। ঘণ্টা দুয়ের পর ফের স্বাভাবিক হয় এলাকা।