জেলা

বন্যা পরিস্থিতির আবনতি, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬

ডিভিসির একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমেনি সেভাবে। ফলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আরও অবনতি হল বন্যা পরিস্থিতির। সোমবার ডিভিসির পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমানো হলেও, মাইথনের ক্ষেত্রে তা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। পরপর তিনদিন ধরে গড়ে এক লক্ষ কিউসেক করে জল ছাড়ছে ডিভিসি। এর ফলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় লক্ষ কিউসেক করে জল ছাড়তে হচ্ছে সেচদপ্তরকে। নিট ফল, দামোদরের তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা যেমন প্লাবিত হয়েছে, তেমনি ইতিমধ্যেই বানভাসি বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর বেড়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতি ও ধসের কারণে সারা রাজ্যে মোট ১৬ জন মারা গিয়েছেন। তাঁদের পরিবারের কাছে ক্ষতিপূরণ বাবদ দু’লক্ষ টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। সোমবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আলোচনা হয়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক-দু’দিনের মধ্যে বন্যাদুর্গত এলাকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যাবেন তিনি। বন্যাদুর্গত এলাকায় এখনও পর্যন্ত মোট ৩৫০টি ত্রাণ শিবির চালু করেছে সরকার। বিপদের আশঙ্কায় বাসস্থান থেকে সরানো হয়েছে ৩৯ হাজার ৩৮০ জনকে। নতুন করে একাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় সোমবার হাওড়ার আমতা ও উদয়নারায়ণপুরের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। উদয়নারায়ণপুর ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং আমতা ২ নং ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে যায় এদিন। দু’টি ব্লকের প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। সোমবার নতুন করে প্লাবিত হয়েছে দেবীপুর, হরিশপুর ও পাঁচারুল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। আমতা ২ নং ব্লকের ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সোমবার বিনলাকৃষ্ণবাটি, থলিয়া ও অমরাগোড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দু’টি ব্লকেই এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ টিম ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে নেমেছে। হুগলির জাঙ্গিপাড়া ব্লকের দামোদর সংলগ্ন আঁকনা, শ্যামপুর, ছিটগোলা ইত্যাদি এলাকা এদিন নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় খানাকুলেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এদিন এখান থেকে জলবন্দি হয়ে থাকা ৩০ জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করে বায়ুসেনার কপ্টার। কংসাবতী ব্যারেজ জল ছাড়তে থাকায় পাঁশকুড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রানিহাটি এলাকায় নদীবাঁধে ফাটল তৈরি হয়। তবে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সোমবার দাসপুর-১, চন্দ্রকোণা-১ এবং চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সৌমেন মহাপাত্র।