ঠান্ডা মাথায় খুন স্ত্রীকে। ছুরি দিয়ে স্ত্রীর নলি কেটে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। শুধু খুন নয়, এরপর সটান থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে স্বামী সমীর শিকারি। মৃতার নাম মালা শিকারি (৩২)। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানার পশ্চিম শীতলা এলাকায়। স্ত্রীকে সন্দেহ করত সমীর। তার মনে হয়েছে, মালাদেবী পরকীয়ায় জড়িত। সম্পর্কের এই জটিলতার কারণেই স্ত্রীকে সে খুন করেছে বলে মনে করছে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। প্রায় বছর ১৫ আগে বিয়ে হয় মালা ও সমীরের। গড়িয়াহাটের ফুটপাতে কাপড়ের দোকান রয়েছে সমীরের। মালাদেবী একটি ঋণপ্রদানকারী সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁদের ১৩ বছরের এক মেয়েও রয়েছে। খটাখটির সংসারে মাঝেমধ্যেই চরমে উঠত ঝগড়া। এক সময়ে অশান্তি সহ্য করতে না পেরে মালাদেবী বাপের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে গিয়েও ঝমেলা করত সমীর। একটা সময় সব কিছু ভুলে স্ত্রীকে বাড়ি ফিরে আসার জন্য বারে বারে অনুরোধ করে স্বামী। তাতে পুরোপুরি সায় না দিলেও প্রায়ই মালাদেবী শ্বশুরবাড়ি এসে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন।
তদন্তকারীরা ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, পুজোর সময় অফিসের কাজে দার্জিলিং যাবেন বলে মালাদেবী তাঁর স্বামীকে জানান। পরে সমীর জানতে পারে, স্ত্রী দার্জিলিং নয়, এক যুবকের সঙ্গে দীঘায় গিয়েছেন এবং সেখানে রিল ভিডিও বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। তা দেখার পর স্ত্রীর প্রতি আক্রোশ বাড়ে সমীরের। স্ত্রী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছে, এই ধারণাই বদ্ধমূল হয় তার। সোমবার রাতে শ্বশুরবাড়ি যায় সমীর। সেখানে বারান্দায় ডেকে পাঠায় স্ত্রীকে। মালাদেবী এলে তাঁর সঙ্গে খোশ-গল্পে মেতে ওঠে স্বামী। সেই সময় হঠাৎই ছুরি বের করে স্ত্রীর গলায় চালিয়ে দেয় সে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মালাদেবী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে সুভাষগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় সে যে অনুতপ্ত নয়, জেরায় স্পষ্ট করেই তা জানিয়েছে অভিযুক্ত। এমনটাই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।