পুজো

মোহিনী একাদশী মাহাত্ম্য!

হিন্দুধর্মে একাদশী তিথির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এই দিনটি শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। প্রতি মাসে দুটি করে একাদশী থাকে, একটি শুক্লপক্ষে ও অন্যটি কৃষ্ণপক্ষে। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথি মোহিনী একাদশী নামে পরিচিত। আগামী ৮ মে বৃহস্পতিবার মোহিনী একাদশী পালিত হবে। বৃহস্পতিবারে একাদশী পড়লে, তার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায়। শাস্ত্র অনুসারে মোহিনী একাদশী পালন করলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে এই দিনে শ্রীহরি নারী রূপ ধারণ করেছিলেন।

মোহিনী একাদশীর তিথি-

বৈদিক পঞ্জিকা অনুযায়ী বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথি মোহিনী একাদশী নামে পরিচিত। ৭ মে সকাল ১০টা ১৯ মিনিট থেকে ৮ মে দুপুর ১২টা ২৯ মিনিটে এই তিথি সমাপ্ত হবে। উদয়া তিথি অনুযায়ী ৮ মে একাদশী ব্রত পালিত হবে। এর পর ৯ মে মোহিনী একাদশী ব্রত পারণ করা যাবে। ভোর ৫টা ৩৪ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ১৬ মিনিট ব্রত পারণের সময়।

শিব মহাপুরাণ কাহিনী

সমুদ্র মন্থনের পর অমৃত দখল করতে দেবতাদের কাছ থেকে অমৃতের কলস কেড়ে নেন অসুররা। কিন্তু অমৃতের অধিকার অসুররা পেয়ে গেলে তারা প্রচণ্ড ক্ষমতাবলে বিশ্ব সংসার ধ্বংস করে দেবে, এই আশঙ্কায় দেবতারা নারায়ণের শরণাপন্ন হন। তখন অসুরদের বিভ্রান্ত করতে সুন্দরী নারীর রূপ ধারণ করেন বিষ্ণু। এই নারীর নাম মোহিনী। মোহিনী-রূপী বিষ্ণুকে দেখে মোহিত হয়ে যায় অসুররা। সব ভুলে অমৃতের কলস তারা বিষ্ণুর হাতে তুলে দেয়। তখন অমৃত কলস নিয়ে দেবতাদের কাছে ফিরে আসেন মোহিনী-রূপী বিষ্ণু এবং দেবতাদের মধ্যে অমৃত বিতরণ করেন তিনি।

ব্রহ্মাসুরের কাহিনী

বিষ্ণুর মোহিনী অবতার নিয়ে আরও একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। ব্রহ্মাসুর নামে এক অসুর ব্রহ্মার কাছ থেকে এই বর পায় যে সে যার মাথায় হাত দেবে, সেই ভষ্ম হয়ে যাবে। ব্রহ্মার কাছ থেকে এই বর পেয়ে ব্রহ্মার মাথাতেই হাত রাখতে উদ্যত হয় ব্রহ্মাসুর। তখন ব্রহ্মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন বিষ্ণু। মোহিনী অবতার রূপ ধারণ করে ব্রহ্মাসুরকে মুগ্ধ করেন তিনি। মোহিনীর রূপের জাদুতে সব ভুলে গিয়ে মোহিনীর সঙ্গে নৃত্য করতে থাকেন তিনি। নাচতে নাচতে একবার ব্রহ্মাসুরের হাত তার নিজের মাথাতেই রাখেন বিষ্ণু। নিজের মাথায় হাত রাখার ফলে নিজেই পুড়ে ভষ্ম হয়ে যায় ব্রহ্মাসুর।

পদ্ম পুরাণ কাহিনী

পদ্ম পুরাণ অনুযায়ী ত্রেতা যুগে মহর্ষি বশিষ্ঠের কথায় এই ব্রত পালন করেছিলেন রাম। এই ব্রতর প্রভাবে সমস্ত ধরনের দুঃখ নিবারণ করা যায়। পাশাপাশি সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এই ব্রতর প্রভাবে। শাস্ত্র মতে মোহিনী একাদশী ১০০০ গোরু দানের সমান ফল প্রদান করে থাকে। এই তিথিতে নারায়ণের পাশাপাশি লক্ষ্মীর পুজো করলে ঘর-পরিবার ধন-ধান্যে ভরে ওঠে।

মোহিনী একাদশীতে করুন এই মন্ত্র জপ

  • ॐ নমো ভগবতে বাসুদেবায় নমঃ
  • ॐ নারায়ণায় বিদ্মহে বাসুদেবায় ধীমহি তন্নো বিষ্ণু প্রচোদয়াৎ
  • ॐ হৃীং শ্রীং লক্ষ্মীবাসুদেবায় নমঃ
  • শান্তাকারং ভূজঙ্গশয়নম পদ্মনাভং সুরেশং বিশ্বাধারং গগনসদৃশং মেঘবর্ণম শুভাঙ্গম। লক্ষ্মীকান্তম কমলনয়নং যোগিভির্ধ্যানগম্য়ম বন্দে বিষ্ণু ভবভয়হরং সর্বলৌকেকনাথম