ক্রাইম

নিউটাউনে উইকএন্ড পার্টিতে ফ্ল্যাটে ডেকে আইটি কর্মীকে ‘গণধর্ষণ’, গ্রেফতার ৩ 

 সহকর্মীদের সঙ্গে উইকএন্ড পার্টি চলছিল জমিয়ে। ফ্ল্যাটের মধ্যেই মদ্যপান- কিছুরই কমতি ছিল না। সঙ্গে তারস্বরে বাজছে সাউন্ড সিস্টেমও। সেই পার্টি ছেড়ে রাতে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন তরুণী আইটি কর্মী। সেই চাওয়াটাই কাল হল! নেশার ঘোরে ফ্ল্যাটে আটকে রেখেই তাঁকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল তিন সহকর্মীর বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, বাড়িতে ঘটনার কথা জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয় তারা। শুক্রবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া-৩ এলাকার একটি বহুতল আবাসনে। কলকাতার মহেশতলার বাসিন্দা ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সকালে ওই তিন সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃত মূল অভিযুক্তের নাম রাহুল সরকার। সে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা। বাকি দু’জনের নাম কৃষ্ণলাল রায় ও জয় কিম। প্রথম জনের বাড়ি হুগলি জেলায়। জয় উত্তর-পূর্ব ভারতের বাসিন্দা। নির্যাতিতা তরুণী এবং ধৃত তিনজনই বি.টেক ইঞ্জিনিয়ার। পেশায় তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী। নিউটাউনে একই অফিসে, এমনকী একই প্রজেক্টে চাকরি করেন চারজন। সেই সুবাদে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। নিউটাউনের ওই বহুতল আবাসনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকত রাহুল। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, উইকএন্ড পার্টির জন্য তিনিই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তরুণী সহকর্মী তাতে রাজি হন। সেই মতো শুক্রবার অফিস শেষ হওয়ার পর চারজনই সোজা চলে যান নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে। সন্ধ্যার পর শুরু হয় পার্টি। প্রথম দিকে সব ঠিক ছিল। তরুণীও টের পাননি তাঁর সঙ্গে কী ঘটতে চলেছে। কারণ, সকলেই তাঁর চেনা-পরিচিত সহকর্মী। পুলিস জানিয়েছে, চারজনে দীর্ঘক্ষণ মদ্যপান করেন। তা এতটাই যে প্রত্যেকের পা টলতে থাকে। সেই সময় বাড়ি যাওয়ার কথা বলেন তরুণী। বাধা দেন রাহুল। অভিযোগ, তারপরই কৃষ্ণলাল ও জয়ের উপস্থিতিতে তিনি ধর্ষণ করেন ওই তরুণীকে। নির্যাতিতা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হননি। রাতভর তাঁর উপর অত্যাচার চলে বলে পুলিসের কাছে জানিয়েছেন তিনি। দু’জনের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটে বলে গণধর্ষণের মামলা দায়ের করেছে পুলিস। বাকি দুই সহকর্মী কেন প্রতিবাদ করেনি বা কাউকে খবর দেয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন সকালে ওই আবাসন থেকে বেরিয়ে সোজা নিউটাউনের টেকনোসিটি থানায় যান নির্যাতিতা। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই একে একে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।