কলকাতা

রাজ্য পুলিশের ডিজি-র দেহরক্ষী গ্রেফতার ১৭ লক্ষ টাকার ডাকাতির অভিযোগে, আটক আরও এক কনস্টেবল 

খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি’র দেহরক্ষীই কিনা ডাকাত!  রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের দেহরক্ষী মহম্মদ শাহাজাহান গ্রেফতার হয়েছে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের ডাকাত দমন শাখার হাতে। তার সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে আরও এক রাজ্য পুলিশেরই কনস্টেবল প্রবীণ প্রসাদ। খাস কলকাতার বুকে এরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে চলতি সপ্তাহেই ১৭ লক্ষ টাকা লুট করে। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেনি। শেক্সপিয়ার সরণী থানা এলাকার ওই ডাকাতির ঘটনায় গতকাল অর্থাৎ শনিবার তাদের গ্রেফতার হতে হয়েছে। তাদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। জানা গিয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল শেক্সপিয়ার সরণী থানায় এসে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ দায়ের করেন যে, ওইদিনই ভবানীপুর থেকে মধ্য কলকাতায় নিজের কাজে যাওয়ার সময় পার্কস্ট্রিট উড়ালপুলে বাইক নিয়ে তাঁর পথ আটকায় দুই পুলিশকর্মী। সেই সময় তাঁর সঙ্গে নগদ ১৭ লক্ষ টাকা ছিল। ওই দুইজন তাঁকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে অন্য একটি গাড়িতে উঠতে বাধ্য করে। তারপর ধর্মতলায় সেই গাড়ি থেকে তাঁকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং ওই টাকা নিয়ে দুইজনে ওই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যায়। ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে লালবাজারের হাতে আসে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানেই দু’জনকে চিহ্নিতও করেন গোয়েন্দারা। আর প্রথমেই হাওড়ার বেলুড় থেকে প্রবীণ প্রসাদ নামে ওই কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে দফায় দফায় জেরা করতেই ডিজির দেহরক্ষী মহম্মদ শাহজাহানের নাম বেরিয়ে আসে। তখন তাকে আলিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এটা পুলিশের শীর্ষমহলে জানেতেও অস্বস্তি বোধ করেন পুলিশ অফিসাররা। পরে অবশ্য জানানো হয়েছে। তাই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আর কেউ জড়িত কিনা সেটা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি শিয়ালদা স্টেশনের বাইরেই এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সোনা ও নগদ টাকা লুঠের ঘটনায় ধরা পড়ে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক ASI ও এক কনস্টেবল।  যে পুলিশ মানুষকে নিরাপত্তা দেবে, অপরাধের শিকড় খুঁজে বের করে দোষীদের আদালতের কাঠগড়ায় তুলবে সেই পুলিশকেই কেন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে? আর খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি-র দেহরক্ষীর ডাকাত হওয়ার ঘটনা তো নজীরবিহীন। ওই দেহরক্ষীর হাতে তো ডিজি খুনও হয়ে যেতে পারতেন!