প্রিয়াংকা সেনগুপ্ত,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ বিজেপির সালিশি সভার জেরে প্রাণ দিতে হল এক বধূকে, বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে গভীর রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা কেশিয়াড়ি জাতীয় সড়কের ওপর। মৃতের নাম মনিমালা দে। মৃতের ছেলে মানস দে জানান, তাঁদের বাড়ী কেশিয়াড়ি থানার কুলাসিনি গ্রামে। তিনি ভুবনেশ্বরের একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। কয়েকদিন আগেই তিনি বাড়ী ফেরেন। তারপর সরকারী নিয়ম মেনেই তিনি হোম কোয়ারান্টাইনে ছিলেন। একদিন পরই গ্রামের নির্বাচিত পঞ্চায়েত্ সদস্যর স্বামী দীপঙ্কর মাইতি, সঞ্জীব দে, দিলীপ ভুঁইয়ারা তাঁদের বাড়ীতে চড়াও হয়ে হুমকি দেয়,গ্রামের বাকি ভিন রাজ্য ফেরতরা যেখানে সরকারী কোয়ারান্টাইন সেন্টারে আছে সেখানে মানস কেন বাড়ীতে থাকছে। তাকে যেন অবিলম্বে সরকারী কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়। আর বাড়ীতে থাকার জন্য মানসের বাবা গৌরীশঙ্কর দের থেকে তিন হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য্য করেন।গ্রামের অন্যান্যরা জানান,কথা ছিল শুক্রবার রাত ৯টার মধ্যে
মানসকে সরকারী কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পাঠাতে হবে। শুক্রবার রাত ৯টার পরও মানস না যাওয়ায় প্রায় দুশো আড়াইশো জন এসে প্রায় চ্যাংদোলা করে মানসের বাবা গৌরীশঙ্করকে গ্রামেরই একটি নতুন তৈরি হওয়া শিবমন্দিরে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কেন ছেলেকে এখনও সরকারী কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়নি সেই নিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হয়। বাড়ানো হয় জরিমানার টাকার পরিমানও। এদিকে স্বামীর ফিরতে দেরি দেখে মনিমালা দেবী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তিনি গৌরীশঙ্কর যে দোকানের কর্মচারী সেই দোকানের মালিক সম্ভু দাসের বাইকে করে কেশিয়াড়ি থানার দিকে রওনা দেন। পথে বেলদা কেশিয়াড়ি জাতীয় সড়কের ওপর একটি বালিবোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় প্রাণ হারান মনিমালা। যদিও এই ঘটনার দায় সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করেছে বি জে পি। এই দুর্ঘটনায় গ্রামের লোকেরা দীর্ঘ সময় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে এস ডি পি ও বেলদা ও কেশিয়াড়ি থানার পুলিশ এসে অবরোধ তোলে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।