সম্পাদকীয়

মাঝে মাত্র চারদিন, শহিদ দিবসে ভার্চুয়াল সভার প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল

মৈনাক দাসঃ করোনা দু’বছর অনেক কিছুকেই বদলে দিয়েছে। সাধারণের’ জীবন যাপন থেকে প্রশাসনিক কাজকর্ম, এমনকি অফিস কাছারিও বদলে গিয়েছে করোনাকালে। কিন্তু যা বদলাইনি তাহলে মানুষের আবেগ। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলতে হয়, একুশে জুলাইকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের আবেগ এতটুকু কমেনি। হতে আর ৪ দিন, জেলা থেকে রাজ্য সর্বত্রই একুশে জুলাই কে কেন্দ্র করে যেন একটা সাজে সাজ রব। এবার একুশে জুলাই আর কলকাতার রাজপথে হচ্ছে না। ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের জন্য বক্তব্য রাখবেন। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত প্রস্তুতির পালা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এনামুল কংগ্রেসের বিপুল জয় সত্বেও একুশের এই দিনটিকে যেহেতু আলাদা করে পালন করা যাচ্ছে না তাই দলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রত্যেক ব্লকে ব্লকে পাড়ায় পাড়ায় একুশে জুলাইকে পৌঁছে দেওয়া হবে। পেল্লাই লাগিয়ে ঘরে বসেই সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টারনেটের সাহায্যে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে দলনেত্রীর কণ্ঠ। একই সময় তা প্রচারিত হবে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ। এখনো পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে দলের সবকটি সোশ্যাল মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, ট্যুইটার থেকে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে। এছাড়াও বিধায়ক সাংসদদের ফেসবুক পেজ থেকেও সরাসরি দেখা যাবে একুশের প্রোগ্রাম। এবার পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অন্য রাজ্যেও সরাসরি দেখানো হবে এই অনুষ্ঠান এছাড়া সমস্ত জেলা অফিস, ব্লক অফিসে লাগানো হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। একুশে জুলাইয়ে এবার একাধিক রাজ্যে জায়েন্ট স্ক্রিন টাঙিয়ে দিদির বক্তৃতা শোনানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম উত্তর-পূর্বের বিজেপি শাসিত রাজ্য ত্রিপুরা। এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় তৃণমূলের তেমন কোনও সংগঠন নেই। তবে একজন রাজ্য সভাপতি রয়েছেন বটে। তিনি আশিষলাল সিংহ। তাঁর বাবা প্রয়াত শচীন্দ্রলাল সিংহ ত্রিপুরার কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আশিষবাবু এখন কলকাতায়। তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপুরার চার জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন টাঙিয়ে একুশে জুলাই দিদির বক্তৃতা শোনানো হবে। গতকাল আশিষলাল সিংহকে ফোন করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তারপর তড়িঘড়ি বৃহস্পতিবারের সকালের বিমানেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে প্রস্তু বৈঠক সারতে আগরতলা থেকে কলকাতায় পৌঁছেছেন তিনি। ত্রিপুরার তৃণমূল সূত্রে খবর, আগরতলার দু’জায়গায়, গোমতী জেলার উদয়পুর এবং রাজ্যের উত্তরপ্রান্তে ধর্মনগরে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে মমতার বক্তৃতা শোনানো হবে একুশে জুলাই। অসমেও কয়েকটি জায়গায় একুশের বক্তৃতা জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে শোনানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সর্বভারতীয় তৃণমূল। যেহেতু ১৯ তারিখ থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু, সেই সময়ে দিল্লিতেই থাকবেন দলের সাংসদরা, তাই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে রাজধানীতেও জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হবে। সেখানে বসেই নেত্রীর বক্তৃতা শুনবেন সাংসদরা। তাছাড়া পাঞ্জাবেও এই ভাবেই জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে মমতার বক্তৃতা শোনানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ নিয়েও ভাবনা রয়েছে বাংলার শাসকদলের নেতৃত্বের। একুশের ভোটে বাংলায় বিজেপিকে রুখে দেওয়ার পরেই অনেকে বলতে শুরু করেছিলেন, এই ভোট জাতীয় স্তরে মোদী বিরুদ্ধে মুখ হিসেবে মমতার উত্তরণ ঘটিয়ে দিয়েছে। ভারত দিদিকে চায় বলে ডিজিটাল প্রচারও করেছে তৃণমূল। দেখা যাক একুশের একুশে জুলাইকে সামনে রেখে বাংলার শাসক দলেরেই উদ্দেশ্য কতটা সফল হয়!