চারদিনে কলকাতা দখলের হুমকি এসেছে বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তার থেকে ৷ বিএনপি নেতা বাংলা, বিহার ও ওড়িশাকে ওপারের অংশ বলে দাবি করেছেন ৷ প্রতিবেশী দেশ থেকে ভারতবিদ্বেষী, বিশেষ করে বাংলা বিরোধী এমন নানা কথার কড়া জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সোমবার বিধানসভায় জোর গলায় তিনি বলেন, “আপনারা বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখল করবেন আর আমরা বসে বসে ললিপপ খাব এমন ভাবার কারণ নেই ৷” এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেন, “কেউ বলছেন বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখল করবেন । আমি বলছি, আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন । এমন ক্ষমতা কারও নেই ৷ কারণ আপনারা বাংলা, বিহার দখল করবেন আর আমরা বসে বসে ললিপপ খাব !” একইসঙ্গে, রাজ্যের মানুষকে সংযত থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, “কোনওভাবেই যেন এমন কিছু না করা হয়, যাতে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয় । বাংলাদেশে যে সংখ্যালঘু অত্যাচার চলছে, সেটাকে ভালো চোখে দেখছি না । দাঙ্গা কোনও হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান করে না । করে কিছু সমাজ বিরোধী, তারা সমাজের বোঝা । আমরা যেন এমন মন্তব্য না করি, যাতে সমাজে তার প্রভাব পড়ে, কারও ক্ষতি হয় । এটা কেন্দ্রের বিষয় । তাদের কথা আমরা শুনব ৷” এদিন মমতা আরও বলেন, “কাল কিছু মানুষ এই নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন । অভিনন্দন জানাই । এই বাংলাই সেদিক থেকে বড় স্তম্ভ । অনেকে বলেছিল মিছিল করতে । আমরা দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই । একটা হিন্দুর গায়ে যা রক্ত আছে, মুসলিমের কাছেও সেই রক্ত আছে ৷ কয়েকটা মিডিয়া যা করছে, এটা উত্তরপ্রদেশ বা দিল্লি নয় যে ব্যান করে দেব, অ্যারেস্ট করব ।” সাম্প্রদায়িক হিংসা থেকে দূরে থাকার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একটা ফেক ভিডিয়ো চলছে । আগুন লাগানোর চেষ্টা চলছে । এটা থেকে দূরে থাকুন । আমরা কেউ কারও পক্ষে নই, আমরা সবার পক্ষে । আমরা যেন অতিরিক্ত কথা না বলি । যাঁরা বলছেন এটা নিয়ে রাজনীতি করবেন, জেনে রাখুন এতে আপনার রাজ্যের ক্ষতি হবে ৷ কেন্দ্র সরকারের কিছু পলিসি আছে । এটা তাদের এক্তিয়ারে পড়ে । অনেকে ঢুকতে চাইছে । কিন্তু তাদের ঢুকতে দেবে কি না সেটা কেন্দ্রের ব্যাপার ।” বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশমন্ত্রক দেখছে বলে জানিয়ে এই নিয়ে প্ররোচনায় পা না-দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, “যাঁদের একটু টাকা পয়সা আছে তাঁরা প্লেনে আসছেন । কিন্তু গরিবদের কিছু নেই, তাঁরা আসতে পারছেন না ৷ তাঁরা বিএসএফকে বলছেন ৷ তাই অতিরিক্ত কোনও মন্তব্য করবেন না যাতে কোনও প্ররোচনার পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ কাল বিদেশসচিবের মিটিং আছে । তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন । বিদেশমন্ত্রক যে গাইডলাইন দেয়, সেটা আমরা মেনে চলি । আমরা এমন একটা পরিবেশ তৈরি করি, যাতে বাংলা দেখিয়ে দেবে ভারতের জাতীয়তাবোধ, মমত্ববোধ সব থেকে সেরা ৷”