কলকাতা

ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনসে অগ্নিকাণ্ড! কোমর জলে নেমে শহরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মেয়র

 অতি গভীর নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে কাজ করছেন পুরকর্মীরা। ময়দানে নেমেছেন খোদ পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই দুর্যোগের মাঝেই খাস কলকাতার ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনসের দোকানে বিধ্বংসী আগুন। দাউদাউ করে জ্বলছে লেলিহান শিখা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন আয়ত্তে আনার চেষ্টায় দমকলের আধিকারিকরা।  অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই ছুটে গেলেন ফিরহাদ হাকিম। কথা বললেন দমকল আধিকারিকদের সঙ্গে। তবে বৃষ্টি ও জলমগ্ন পরিস্থিতির কারণে আগুন নেভাতে বেশ পেতে হচ্ছে দমকলকর্মীদের।  জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনসের বাজারের একটি দোকানে আগুন দেখা যায়। মুহুর্তে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। খবর দেওয়া হয় দমকলে। তবে ইঞ্জিন পৌঁছনোর আগেই পাশের আরেকটি দোকানেও ছড়িয়ে পড়ে আগুন। একে একে পৌঁছয় দমকলের ৪ টি ইঞ্জিন। ছুটে যান ফিরহাদ হাকিম। দমকল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরিস্থিতির খোঁজ নেন। তবে ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় বেশ বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। তবে বেশ কয়েকঘণ্টার চেষ্টায় আয়ত্তে আসে আগুন। প্রাথমিকভাবে দমকল কর্মীদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই ঘটনা। তবে আগুন পুরোপুরি না নেভা পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। সোমবার রাতভর টানা বৃষ্টিতে কার্যত অচল কলকাতা। শহরের অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসন সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে, তবে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব নয়। মেয়রের কথায়, “এরকম মেঘভাঙা বৃষ্টি আমি কোনওদিন কলকাতায় দেখিনি। আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি এই শহরে। খবরের কাগজে পড়েছিলাম উত্তরাখণ্ড বা কাশ্মীরে এভাবে বৃষ্টি হয়। কিন্তু কলকাতায় ৩০০ মিমির বেশি বৃষ্টি এর আগে কখনও দেখিনি।” মেয়র জানিয়েছে, সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে নদীর জলস্তর ফুলে উঠেছে। নদীতে জল একেবারে পূর্ণ, ক্যানেলগুলো ভরে আছে। আমরা পুরসভার ড্রেন থেকে জল ফেলতে গেলেই ব্যাক ফ্লো হয়ে তা আবার শহরে ফিরে আসছে। দুপুরের বান কেটে গেলে তবেই জল নামানো সম্ভব হবে। আগে জল খালে যাবে, খাল থেকে নদীতে, তারপর সমুদ্রে। এর বাইরে কোনও উপায় নেই,” বলেন ফিরহাদ। তিনি আরও জানান, কিছু এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার খবর এসেছে। তাই নাগরিকদের অনুরোধ কেউ ঘর থেকে বেরোবেন না। বিদ্যুতের খুঁটি প্রাণঘাতী হতে পারে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়া এলাকায়। ওখানে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষত পুরসভার ১০৮ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে ড্রেনেজ সিস্টেম না থাকায় সেখানে অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। মেয়র বলেন, “আমাদের পাইপ সিস্টেম ঘণ্টায় ২০ মিমি জল নামানোর ক্ষমতা রাখে। কিন্তু ৩০০ মিমি জল নামাতে গেলে সেটাকে নদী ও সমুদ্রে পৌঁছতে সময় লাগবেই। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব নয়। এবারের বৃষ্টি একেবারেই অস্বাভাবিক।”