গত শনিবারের ধসে বিপর্যস্ত হয়েছে গোটা পাহাড়। প্রাণও গিয়েছে বহু মানুষের ৷ শুধু সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমবেশি ১০ কোটি টাকা ৷ এখনও তার রেশ কাটেনি। তবু মিরিক বাদে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পং। আর এরই মাঝে ফের এল খারাপ খবর। এবার আচমকা একাধিক ধসে বন্ধ হয়ে গেল বাংলা-সিকিম লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। আর তার ফলে আরও একবার পাহাড়ের পর্যটন ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে ৷ কোথাও কোথাও রাস্তার এক তৃতিয়াংশই ধসে গিয়েছে বলে খবর। কোথাও পরিস্থিতি এর থেকে খানিকটা ভালো ৷ বৃহস্পতিবার রাতে ধস নামে জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায় ৷ ধসে রাস্তার বিস্তীর্ণ অংশ ভেঙে খাদে তলিয়ে যায়। এর ফলে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা। শুক্রবার সকালেও রয়ে গিয়েছে সেই রেশ ৷ জানা গিয়েছে, ২৯ মাইল থেকে গেইলখোলা যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। শুক্রবার সকাল থেকে রাস্তা সারানোর পাশাপাশি পরিস্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু একাধিক জায়গায় রাস্তার বিস্তীর্ণ অংশ পুরোপুরি ধসে যাওয়ায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। আর তা এখনই চালু করার আশাও দেখেছেন না প্রশাসনের কর্তাদের একটা বড় অংশ ৷ বর্তমানে সেভক থেকে লাভা এবং আলগাড়া হয়ে গরুবাথান দিয়ে কালিম্পং ও সিকিমে যান চলাচল করানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে বাংলা থেকে সিকিমের মধ্যে যাতায়াত করতে পর্যটকদের অতিরিক্ত চার ঘন্টা লাগছে ৷ বৃহস্পতিবার রাত থেকে ধস নামতে শুরু করে। জাতীয় সড়কে বিশাল বড়-বড় গর্ত তৈরি হয়ে যায় ধসের ফলে। পুলিশ প্রশাসনের তরফে ধস কবলিত জায়গাগুলোতে ব্যারিকেড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পাহাড় কেটে পথ অন্তত ছয় ফুট প্রশস্ত করতে হবে। আর তার ফলে এদিন আর ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল করানো সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে তারা। মেরামতির কাজ শেষে করে পরিস্থিতি কবে আবার স্বাভাবিক হয় সেটাই এখন দেখার ৷ এর মধ্যে নতুন করে ধস নামলে তার ফল হবে মারাত্মক ৷ সংস্কারের কাজও ধাক্কা খাবে তাহলে ৷ ইতিমধ্যেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও জিটিএ ধস সংস্কারের কাজে নেমেছে। প্রচুর গাড়ি ওই সড়কে আটকে রয়েছে। তার মধ্য পর্যটকদেরও বেশকিছু গাড়ি রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুব্রহ্মণ্যম টি বলেন, “রাতে ওই সড়কের একাধিক জায়গায় ধস নামে। কোথাও রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়েছে। আবার কোথাও রাস্তার বেশিরভাগ অংশ ধসে গিয়েছে। সেজন্য ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এনএইচআইডিসিএল কাজ করছে। আপাতত সমস্ত গাড়ি ৭১৮ এ জাতীয় সড়ক দিয়ে ঘুরপথে চলাচল করবে।”


