না বৃষ্টিতে ফের উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় । ধসে বিধ্বস্ত গোটা পাহাড় । দার্জিলিংয়ে একাধিক জায়গায় ধসের কারণে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে ৷ এখনও পর্যন্ত 20 জনের মৃত্যুর খবর মিলছে । মিরিকে ভেঙে পড়েছে লোহার সেতু । যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন । ধসের কারণে বন্ধ রয়েছে 10 নম্বর জাতীয় সড়ক । সবমিলিয়ে প্রকৃতির তাণ্ডবলীলা বিপর্যস্ত পাহাড় । জানা গিয়েছে, ধসে শুধুমাত্র মিরিকেই মৃত্যু হয়েছে 11 জনের । দার্জিলিংয়ের সিংমারিতে মৃত্যু হয়েছে একজনের ও কার্শিয়াংয়ের সোনাদায় মৃত্যু হয়েছে একজনের । মিরিক মহকুমায় মৃতরা হল, 1. ঊষা রাই (72), 2. বিজেন্দ্র রাই (70), 3. সাধনা তামাং (35), 4. আহান ছেত্রী (9), 5. রুহি তামাং (11), 6. স্নেহা প্রধান (19), 7. অনুজ প্রধান (42), 8. আরুষি ছেত্রী (12), 9. অনিতা প্রধান (41), 10. ফুচুং ডুকপা (50), 11. সুমিত লেপচা (46), 12. মিনা সেওয়া (62), 13. জ্ঞানচুক তামাং (20), 14. বাবুলাল রাই (42) ও 15. সাধনা তামাং (35) ৷ এছাড়াও মানেভঞ্জন এলাকায় আরও অজ্ঞাত পরিচয় তিনটে দেহ ও সুখিয়াপোখরি ব্লকের সোম সিয়কে আরও দুটো অজ্ঞাত পরিচয় দেহ উদ্ধার হয়েছে । পাহাড় ও সমতল জুড়ে যে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হবে, তা আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর । সেই মতো রাত থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয় উত্তরবঙ্গ জুড়ে । দার্জিলিং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মিরিকে লোহার সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছে নয় জনের । সুখিয়ায় ধসে চাপা পড়ে মারা গিয়েছে চারজন । পাহাড়ে একাধিক জায়গায় এখনও ধস চলছে । শুরু হয়েছে ধস সরানোর কাজ । সিকিমেও অনেক জায়গায় আটকে পড়েছেন পর্যটকরা । কার্শিয়াংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, “মিরিকে ধস থেকে পাঁচটি দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে । আর দুটি দেহ ভোরে উদ্ধার করা হয়েছিল । সুখিয়াতে আরও চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে । আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে । বেলার দিকে বৃষ্টি কমায় জোরকদমে উদ্ধারকাজ চলছে । শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী রোহিণীর রাস্তায় একাধিক জায়গায় ধসের কারণে সড়ক বন্ধ রয়েছে । দিলারামের সড়কও বন্ধ রয়েছে । মিরিকের ধস ভয়াবহ । সেখানেও উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে ।” এর মধ্যেই আগামিকাল শিলিগুড়ি রওনা হচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যেই বড় উদ্যোগ নিল উত্তরবঙ্গ পরিবহণ রাজ্য পরিবহণ নিগম। এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ রাজ্য পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় জানান ইতিমধ্যেই ৬টি বাস জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই মোট তিনটি ট্রেনকে বাতিল করা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রের খবর, রবিবার সকাল থেকে শিলিগুড়ি-ধুবড়ি ডেমু, এনজেপি-আলিপুরদুয়ার পর্যটক স্পেশ্যাল, শিলিগুড়ি-বামনহাট এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেন বিন্নাগুড়ি, গুলমার মতো স্টেশন পর্যন্ত চলবে। শিয়ালদহ-আলিপুরদুয়ার এক্সপ্রেস, সিকিম-মহানন্দা এক্সপ্রেসের মতো বেশ কিছু ট্রেন ঘুরপথে চালানো হচ্ছে।


