দেশ

 ‘১২৭ কিলোমিটার গতি নিয়ে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস, যার জেরেই ৩টি ট্রেনের সংঘর্ষ’, এমনটাই দাবি রেলের প্রাথমিক রিপোর্টে

 রেলওয়ে সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুম থেকে প্রাথমিক ভাবে করমণ্ডলের এই লুপ লাইনে ঢুকে পড়ার কথাই উল্লেখ করা হয়েছিল। মেন লাইন ধরে যাওয়ার পরিবর্তে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস ঢুকে পড়ে লুপলাইনে, যেখানে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল মালগাড়ি। অর্থাৎ ভুল লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যার কারণে পরপর তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ ও মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ২৮০। শুক্রবার দুপুরে রেলের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হল।  শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বেলা পর্যন্ত ঘটনাস্থল খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণের পর রেলের তরফে প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। যে রিপোর্ট বলছে, ‘আপ মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। অথচ সেই লাইনে না ঢুকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল মালগাড়িটি। সেটির সঙ্গে সংঘর্ষের পরেই লাইনচ্যুত হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ঠিক সেই সময়েই ডাউন লাইন দিয়ে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস যাচ্ছিল। সেই ট্রেনের ২টি কামরা লাইনচ্যুত হয়।’ প্রাথমিক রিপোর্টের পরেও দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে একাধিক প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। এদিকে, ট্রেন দুর্ঘটনার ‘সম্ভাব্য’ কারণ জানা গেছে খড়গপুর ডিভিশনের রুট রিলে ইন্টারলকিং সিগন্যাল রুমের ভিডিও দেখে। ওড়িশার ভদ্রক পর্যন্ত যাবতীয় ট্রেনের যাতায়াত নির্ধারিত হয় খড়গপুর ডিভিশনের রুট রিলে ইন্টারলকিং থেকে। ভিডিওতে দেখা গেছে, বাহানগর বাজার স্টেশনের কাছে মোট চারটি লাইন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি লুপ লাইন। আর বাকি দুটি মেইন লাইন। চেন্নাইগামী করমণ্ডল ট্রেনের মূল লাইন দিয়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মূল লাইনে না গিয়ে এটি লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় ১২৭ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে আসা করমণ্ডল এক্সপ্রেস অত্যন্ত জোরে মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। তখন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি ছিটকে পাশের আরেকটি মূল লাইনে গিয়ে পড়ে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিপরীত দিক থেকে বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস চলে আসে। লাইনের ওপর পড়ে থাকা করমণ্ডল ট্রেনের কয়েকটি বগিতে সজোরে ধাক্কা মারে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। এতেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিওয় দেখা গেছে যে, ভুল লাইনে ঢুকে পড়েছে শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা কি মানুষের ভুলে হয়েছে নাকি কোনও কারিগরি ত্রুটির কারণে হয়েছে সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মানুষের ভুলই এজন্য দায়ী। কারণ করমণ্ডল এক্সপ্রেস প্রথমে ভুল লাইনে প্রবেশ করেছিল। এরপর এটি লাইনচ্যুত হয়েছিল। সবুজ সিগন্যাল থাকা সত্ত্বেও কীভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল করমণ্ডল এক্সপ্রেস? যদিও কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির তরফে রিপোর্ট প্রকাশ করার পরেই দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যাবে।