কলকাতা

মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য

আলিপুর আদালত চত্বরের একটি অনুষ্ঠানে মমতার করা কয়েকটি ‘ব্যক্তিগত’ মতামতমূলক মন্তব্যের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত অবমাননার মামলা করার অনুরোধ করেছিলেন তিনি। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় হলফনামা জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সেই হলফনামা দাখিল না করায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, দুপুর ১টার মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে।   গত মঙ্গলবার আলিপুর আদালতের একটি অনুষ্ঠান উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রসঙ্গ। মমতা বলেছিলেন, ‘আমরা তো আইনজীবীদের ওপর নির্ভর করি। বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অধিকার কাড়ার পক্ষে নই। আমি অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত, সেই অধিকারের কথা বলছি। আমি যদি অন্যায় করি, আপনারা গালে দুটো চড় মারুন। আমি কিচ্ছু মনে করব না। আমি ক্ষমতায় আসার পর একটাও সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তা হলে তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কাড়বার ক্ষমতা আছে! প্রধান বিচারপতি এখানে নেই, আমি সুব্রতদাকে বলব, যিনি এখানে আছেন। এটা আমার ব্যক্তিগত মত, দয়া করে এত সহজে চাকরি কেড়ে নেবেন না।’ ঘটনাচক্রে সেই সময় ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। তাঁকে উদ্দেশ্য করেই শেষের কথাগুলি বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করার অনুরোধ করেছিলেন বিকাশবাবু। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে বিকাশবাবু মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের কথা জানিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করার অনুরোধ করেছিলেন। তবে আদালত সেই আর্জিতে পুরোপুরি সায় দেয়নি। পরিবর্তে আদালত বলেছিল, কোনও অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার শুনানির বদলে ভাল যদি কোনও মামলাকারী এ বিষয়ে আবেদন করেন। সেই কথা শুনে বিকাশবাবুই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এ বিষয়ে হলফনামা দাখিল করার পরামর্শও দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সেই হলফনামাই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে জমা পড়ার কথা ছিল আদালতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যথাসময়ে তা জমা পড়েনি। এর পরই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ দুপুর ১টার মধ্যে হলফনামা দাখিল করতে নির্দেশ দেয়।