বিদেশ

একের পর এক তীব্র ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক- সিরিয়া, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪ হাজার, জখম বহু

একের পর এক তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তুরস্ক ও সিরিয়া। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাড়িঘর, বহুতল। ঘুমের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে প্রাণ হারালেন অসংখ্য মানুষ। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৪০০০। জখম অসংখ্য। সাতদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে তুরস্ক। প্রথম জোরালো কম্পনটি অনুভূত হয় সোমবার কাকভোরে। স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোর ৪টে ১৭ মিনিটে। রিখটার স্কেলে তীব্রতা ৭.৮। মৃত্যুমিছিলের সেই শং। স্বজন হারানোর কান্না তখনও থামেনি, ফের জোরালো কম্পন অনুভূত হয়। এবার দুপুর ১টা ২৪ মিনিটে। রিখটার স্কেল জানায়, এই কম্পনের তীব্রতা ৭.৫। ধ্বংসের ছবিটা আরও বাড়ে। স্বজন হারানোর কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে দু’দেশের আকাশ-বাতাস। সন্ধ্যার দিকে আরও একটি শক্তিশালী ভূকম্প হয়। সেটির তীব্রতা ছিল ৬ মাত্রার। তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত ১০০ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে জোরালো ভূমিকম্প বলে দাবি করা হচ্ছে। কম্পনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, ইরাক, লেবানন সাইপ্রাস থেকে শুরু করে সুদূর গ্রিনল্যান্ডে পর্যন্ত তা অনুভূত হয়েছে। দু’টি টেকটনিক প্লেট সমান্তরালভাবে দু’দিকে সরে যাওয়ার ফলে এত বড় বিপর্যয়। তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ। ভেঙে পড়া ঘর-বাড়ির নীচে অসংখ্য মানুষের চাপা পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যাটা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে শঙ্কিত দুই দেশই। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে বলেছে, প্রথম ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭.৯ কিলোমিটার গভীরে। আর দ্বিতীয় ভূমিকম্পের উৎসস্থল একিনোজু শহরের ৪ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে। প্রথম ভূমিকম্পের পর তুরস্কের এএফএডি জরুরি পরিষেবা কেন্দ্র জানায়, আরও অন্তত ৫০টি ছোট কম্পন (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে। তার রেশ কাটার আগেই দ্বিতীয় জোরালো ভূমিকম্প তছনছ করে দিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রবল ঠান্ডায় তুরস্কের রাস্তা এখনও বরফে ঢাকা। ফলে বহু জায়গায় উদ্ধার কাজ চালানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে প্রশাসনের কাছে। 
এদিনের বিপর্যয়ে শোকপ্রকাশ করে তুরস্কের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপরই তড়িঘড়ি তুরস্কে উদ্ধারকারী দল, মেডিক্যাল টিম ও ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। সাউথ ব্লকে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র। সিদ্ধান্ত হয়, মোট ১০০ জনকে নিয়ে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) দু’টি দল যাবে তুরস্কে। সঙ্গে থাকবে উদ্ধার কাজে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও ডগ স্কোয়াড। ওষুধ সহ  চিকিৎসকদের টিমও তৈরি রাখা হয়েছে।