নাগরাকাটায় মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর আক্রমণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিলেন ৷ ২৪ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ৷ এর মধ্যে পদক্ষেপ না-নিলে, সংবিধান অনুযায়ী পুলিশের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৷ এই ঘটনা তাঁর কাছে ‘গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে হত্যা’র সামিল ৷ সেই সঙ্গে একজন সাংসদ ও বিধায়কের উপর হামলার ঘটনা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতির ইঙ্গিত দেয় বলেও মনে করেন তিনি ৷ উল্লেখ্য, রবিবার হড়পা বানের জেরে প্লাবিত নাগরাকাটা ব্লকের দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিজেপির মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ৷ কিন্তু, সেখানে পৌঁছানোর পর স্থানীয় লোকজন সাংসদ এবং বিধায়কের উপর হামলা চালায় ৷ এই ঘটনায় খগেন মুর্মু গুরুতরভাবে জখম হন ৷ রক্তাক্ত হতে হয় তাঁকে ৷ এদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে যান সাংসদ এবং বিধায়কের সঙ্গে দেখা করেন ৷ সেখানেই রাজ্য পুলিশের ভূমিকা এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷ তিনি বলেন, “রাজ্যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর এই ধরনের আক্রমণ গণতন্ত্রকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয় ৷ পশ্চিমবঙ্গের মতো এমন উন্নত রাজ্যে এই ধরণের ঘটনা সবদিক থেকেই নেতিবাচক। মানুষের দ্বারা নির্বাচিত সাংসদ ও বিধায়কদের উপর এহেন আক্রমণ আশ্চর্যজনক ও দুর্ভাগ্যজনক। গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে হত্যার সামিল ৷” উল্লেখ্য, এই ঘটনায় সোমবারই বিজেপির তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল 8 জনের বিরুদ্ধে ৷ পাশাপাশি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষজনকে সাংসদ এবং বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত করে তোলার অভিযোগও করে বিজেপি ৷ তবে, সাংসদ এবং বিধায়কের উপর হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ৷ তা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ রাজ্যপাল ৷ এদিন খগেন মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজ্যপাল বলেন, “এখানে পুলিশের ভূমিকা বিশেষভাবে নজর করার মতো ৷ পুলিশের ভারতের সংবিধান মেনে কাজ করা উচিত ৷ পুলিশকে নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করতে হবে ৷ 24 ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ পদক্ষেপ না-নেওয়া হলে, ভারতের সংবিধান অনুযায়ী যা করার, তা করা হবে ৷” বিজেপি প্রতিনিধি দলের উপর এই হামলার ঘটনার পর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ৷ রাতে নাগরাকাটা থানা-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি নেতৃত্ব ৷ মঙ্গলবারও একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে রাজ্য বিজেপি ৷ বিক্ষোভেপর আঁচ গিয়ে পড়েছে দিল্লির বঙ্গভবনেও ৷


