কলকাতা

সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন রুম বন্ধ করুন, উচ্চশিক্ষা দফতরকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের ঘটনার পর রাজ্যের সব কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ রাখার নির্দেশ দিক উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ইউনিয়ন রুম বন্ধ করে দিতে উচ্চশিক্ষা দফতরকে নোটিশ জারি করতে হবে । কর্তৃপক্ষ ওই রুম তালা বন্ধ করে রাখবে । কোনও রকম রিক্রিয়েশনের জন্য ওই রুম ব্যবহার করা যাবে না। ইউনিয়ন রুম খোলার জন্য জরুরি কোনও প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে যথাযথ কারণ জানিয়ে চিঠি দিয়ে আবেদন করতে হবে । এদিন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সব কলেজে ইউনিয়ন রুম বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান । কারণ উচ্চশিক্ষা দফতর আগের একটি মামলায় হলফনামা দিয়ে আদালতে জানিয়েছে, রাজ্যের কোনও কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি । ফলে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নেই । তাই সব কলেজে ইউনিয়ন রুম খোলা থাকার কোনও কারণ নেই বলে যুক্তি দেন তিনি । আদালত এই বক্তব্য শোনার পর আপাতত ছাত্র ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে, দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এদিন রাজ্যকে তদন্ত রিপোর্ট ও কেস ডায়েরি আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ নির্যাতিতার আইনজীবীকে মামলার সমস্ত কপি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন । পাশাপাশি নির্যাতিতার পরিচয় যাতে কোনওভাবেই সংবাদমাধ্যম ও সমাজ মাধ্যমে প্রকাশ না-হয়ে যায়, তার জন্য রাজ্যকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । আগামী ১০ জুলাই ফের মামলার শুনানি হবে । গণধর্ষণের ঘটনায় মোট তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে । তার মধ্যে বিজয় কুমার সিংহল নামে যিনি মামলাকারী, তাঁর মামলায় একাধিক ত্রুটি থাকায় সেই আবেদন প্রত্যাহার করে ফের নতুন করে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত । এদিন রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সমস্ত রকম আইনি পদক্ষেপ করেছি । অভিযোগ পাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে একজন মহিলা অফিসার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ।” পাশাপাশি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, নির্যাতিত মেয়েটির পরিচয় যাতে প্রকাশ না-করা হয়, তার জন্য আদালত নির্দেশ দিক । কারণ টিভি চ্যানেল ও সমাজমাধ্যমে মেয়েটির পরিচিতদের এমন ভাবে দেখানো হচ্ছে যে, তার ফলে মেয়েটিকে চিহ্নিত করা সহজ হয়ে যাচ্ছে । এদিন মামলার শুনানির শুরুতেই বিচারপতি সৌমেন সেন আইন কলেজকে কেন এই মামলায় যুক্ত করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলেন । পাশাপাশি বিচারপতি বলেন, “কীভাবে এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের হল এবং তারপর এই সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট আমরা দেখতে চাই ।” অন্যদিকে, অপর একটি মামলায় আজ রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের হলফনামা তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট । আগামী ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা দিয়ে নির্বাচনের বিষয়ে রাজ্যের কী অবস্থান তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ । আগামী ১৭ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে । রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আদালতে জানান, “নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য থাকা প্রয়োজন । কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর নেই । আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এ ব্যাপারে হলফনামা দিয়ে আমরা জানাব রাজ্যের অবস্থান । কিছুটা সময় দেওয়া হোক ।” কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এই মামলায় যুক্ত করা হয়নি বলেও জানান তিনি ।