জেলা

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের মহিলা-যোগ, অয়ন শীলের ফোন ঘেঁটে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য

নিয়োগ দুর্নীতিতে নতুন নাম। রবিবার ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল। তদন্তকারীদের দাবি অয়নের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নথি প্রমাণ করে রাজ্যের সর্বস্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে। রবিবার অয়নকে গ্রেফতার করার আগে তাঁর সল্টলেকের অফিসে ৩৭ ঘন্টার ম্যারাথন তল্লাশি চালায় ইডি আধিকারিকরা। সেখানেই ইডির হাতে এসেছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি। এবার অয়ন শীলের সূত্র ধরে সামনে এল আরও এক রহস্যময়ীর নাম। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের শুরু থেকেই বার বার উঠে এসেছে মহিলাদের নাম। পার্থর অর্পিতা, গোপালের হৈমন্তী, কুন্তলের সোমার পর এবার অনয় শীলের সূত্রে মিলল আরও এক মহিলার হদিশ। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে অয়নকে গ্রেফতার করে তাঁর ফোনের হোয়াটস্যাপ চ্যাট ঘেঁটে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডির হানা দেওয়ার আগেই অয়নকে সতর্কবার্তা দিয়েছিল ওই মহিলা। অয়নকে হোয়াটস্যাপে মেসেজ করে বলা হয়েছিল,’পালিয়ে যাও। জিনিসপত্র সরিয়ে দাও। ইডি আসতে পারে।’ এই চ্যাট দেখে চোখ কপালে উঠেছে ইডি অফিসারদের। কিন্তু এবিষয় মুখ খোলেননি অয়ন। ইতিমধ্যেই ওই মহিলার খোঁজ শুরু করেছে ইডি। জানা যাচ্ছে মহিলার নাম শ্বেতা চক্রবর্তী। পেশায় মডেল এবং পাশাপাশি রাজ্যের একটি পুরসভায় কর্মরত তিনি। শ্বেতার বাড়ি নৈহাটী পৌরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়নগর জেলাপাড়াতে । প্রথমে হুগলি জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে চুক্তিভিত্তিক এসটিপি পদে চাকরি করতেন তিনি । তখন অয়ন শীল হুগলির চুঁচুড়া যগুদাস পাড়ার আদি বাড়িতে থাকতেন । সেই সময়

কোনও ভাবে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় শ্বেতা চক্রবর্তীর । তারপর থেকে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে । এরপর কামারহাটি পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরিতে যোগ দেন শ্বেতা । তাঁর বাবা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন কর্মী । শ্বেতাকে অয়ন শীল ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি সাদা এক্সইউভি গাড়ি দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে । অয়ন শীলের প্রোমোটারি সহ বিভিন্ন ব্যবসা সামাল দিতেন শ্বেতা । তাঁর সঙ্গে অয়ন শীলের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টেরও হদিশ পেয়েছে ইডি । তাতে মোটা অংকের লেনদেনও হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে । এছাড়া ইডির তদন্তে বেশকিছু জায়গায় ফ্ল্যাটের হদিশ মিলেছে। তার মধ্যে কামারহাটি পৌরসভার সামনেই একটি আবাসনে শ্বেতার ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । এলাকার বাসিন্দারা ভাবতেই পারছেন না যে এমন চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে যাবে শ্বেতার নাম। তবে বিলাসবহুল সাদা রঙের এক্সইউভি গাড়িতে তাঁকে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে। শ্বেতা চক্রবর্তীর বাবার দাবি অয়নের ব্যবসার প্রোমোশনে অ্যাম্বাসাডর হিসেবে কাজ করতেন তাঁর মেয়ে । পরবর্তীকালে অয়ন শীলের স্ত্রী কাকলি শীল অয়নের বিভিন্ন ব্যবসায় সাহায্য করতে বলেন শ্বেতাকে । তখন থেকেই তিনি অয়নের ব্যবসা দেখাশোনার কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন শ্বেতার বাবা । তাঁর দাবি বিলাসবহুল গাড়ির জন্য অয়ন ৪৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন মাত্র । মেয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে না জানিয়ে লেনদেন হয়ে থাকতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি । তবে তাঁর মেয়ে কোনও দুর্নীতিক সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন শ্বেতার বাবা অরুণ চক্রবর্তী ।